আবহাওয়া ভালো, ফলন বেশি আসছে রাজশাহী, সাতক্ষীরার স্বাদে বৈচিত্র্য।
প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২৫, ১১:১৭:৫৩
আবহাওয়া ভালো, ফলন বেশি আসছে রাজশাহী, সাতক্ষীরার স্বাদে বৈচিত্র্য। বাজারে আমের ছড়াছড়ি, খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা বিশ্ববাজারে রপ্তানির সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। "গাছেই পেকে গেছে মিষ্টি লাভ" রাজশাহীর এক আমচাষির উক্তি
প্রকৃতি যেন এবার মুখ খুলেছে আমপ্রেমীদের পক্ষে। মৌসুমের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন বাজারে নেমে এসেছে আমের দাম, আর তাতেই শুরু হয়েছে একরকম 'মিষ্টি ঝড়'। রাজশাহী, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন আমবাগানে ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমের সরবরাহ বেড়েছে বহুগুণ। আম্রপালি থেকে হিমসাগর, ল্যাংড়া থেকে গোপালভোগ সবই এখন ঢাকার পাইকারি ও খুচরা বাজারে চোখে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন: চলতি বছর বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা ব্যালান্সড থাকায় ফলন হয়েছে ব্যতিক্রম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর আম উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৮%। রাজশাহীর আমচাষি আবুল হোসেন জানান, “গত বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে বেশি আম এসেছে। ফলন এত ভালো যে, এখন গাছেই পেকে যাচ্ছে মিষ্টি লাভ!” বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১২০ টাকায়, যেখানে গত বছর এই সময় দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আম্রপালি এবং ল্যাংড়া কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হলেও আগের তুলনায় তা যথেষ্ট সহনীয়। বিশ্বব্যাপী যেখানে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি চলছে, সেখানে বাংলাদেশের আমবাজারে এই মিষ্টি স্বস্তি বিশ্ববাসীকেও ভাবাচ্ছে। BBC-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার আম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখন অন্যতম সম্ভাবনাময় রপ্তানিকারক হিসেবে বিবেচিত। ইতোমধ্যে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি আমের কনসাইনমেন্ট যাচ্ছে। তবে চ্যালেঞ্জও আছে। কৃষি গবেষক ড. ফারহানা ইসলাম বলেন, “আমের চাহিদা থাকলেও আন্তর্জাতিক মান ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি এখনও বড় প্রতিবন্ধক। সরকারের উচিত রপ্তানিতে বেশি মনোযোগী হওয়া।” এদিকে ঢাকাবাসীর মুখে ফুটেছে হাসি। অফিসফেরতা এক ক্রেতা বললেন, “এই দামে যদি হিমসাগর পাওয়া যায়, তাহলে তো প্রতিদিনই আম খাওয়া যায়!” ছোটদের পছন্দ আম্রপালি, বড়রা চাইছেন গোপালভোগের ঘ্রাণ।
বিশ্বসংযোগ:
ম্যাঙ্গো লাভারদের আন্তর্জাতিক কমিউনিটি ‘Mango World এ বাংলাদেশের হিমসাগর ও ল্যাংড়া নিয়ে আলোচনার ঝড় চলছে। ভারত, মেক্সিকো ও ফিলিপাইনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের আমও এখন বৈশ্বিক খাদ্যনন্দনের অংশ। এই মুহূর্তে আম খাওয়ার সবচেয়ে সঠিক সময়। কারণ দাম কম, স্বাদ বেশি। তবে রপ্তানি, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সময়োচিত পদক্ষেপ না নিলে আন্তর্জাতিক বাজারের সম্ভাবনাগুলো মাটিচাপা পড়তে পারে। এবারের 'মিষ্টি ঝড়' তাই শুধু স্বাদ নয়, অর্থনীতির চাবিকাঠিও হতে পারে।
"এই দামে যদি হিমসাগর পাওয়া যায়, তাহলে তো প্রতিদিনই আম খাওয়া যায়!" ঢাকার আমপ্রেমী এক ক্রেতা