সাবেক এমপির জমি-ফ্ল্যাট জব্দ, তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০২৫, ৩:৩৮:০১
দুদকের মামলায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ফ্ল্যাট, জমি ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ
মানিলন্ডারিং ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে বেআইনি সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মানিলন্ডারিং এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার তদন্তের প্রেক্ষিতে ঢাকা ২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের নামে থাকা বহুমূল্য সম্পদ জব্দ ও ১১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে তার স্ত্রী সাহিনা বেগমের শেয়ার ও ব্যাংক হিসাবও রয়েছে। ২৫ জুন বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার।
জব্দ সম্পদের পরিসর
আদালতের আদেশে রাজধানীর ধানমন্ডি, ইস্কাটন ও ধামরাইয়ের চারটি ফ্ল্যাটসহ পূর্বাঞ্চলের ১০ কাঠা জমিসহ মোট ১৯৩ শতাংশ জমি জব্দ করা হয়। বেনজীরের তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, একটি মটরযান এবং ৯টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তার স্ত্রী সাহিনা বেগমের একটি কোম্পানির শেয়ার, একটি ডিপোজিট এবং দুইটি ব্যাংক হিসাবের ১ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৩ টাকা অবরুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেনজীরের জব্দকৃত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ২৮০ টাকা। শেয়ার, গাড়ি ও ব্যাংক হিসাবের মূল্য ১ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৮৬ টাকা।
মামলার পটভূমি ও অভিযোগ
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দায়িত্বে থেকে অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বেনজীর আহমেদ ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৯৬১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে থাকা ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৮৪ কোটি ৪২ লাখ ৮ হাজার ২৫৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তদন্তকালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বেনজীর এসব সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন, যা আটকানো প্রয়োজন। সাহিনা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং বেনজীর অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ৯৭ কোটি ৪৭ লাখ ৩৮৫ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখল করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতের মন্তব্য ও পরবর্তী ব্যবস্থা
আদালত উল্লেখ করেছেন, অপরাধলব্ধ সম্পদ অবরুদ্ধ করা না গেলে রাষ্ট্রের অনুকূলে তা বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না এবং এর ফলে রাষ্ট্রকে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতে হবে।