বছরের পর বছর দুর্বোধ্য ভাষা ও বাস্তব প্রভাবহীনতার কারণে হারিয়েছে গুরুত্ব, জানাল সংস্থার অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ
প্রকাশিত : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১:১৩:৫৫
জাতিসংঘের প্রকাশিত রিপোর্টগুলো নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখন আগের চেয়ে অনেক কম এমন তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের নিজস্ব এক প্রতিবেদনে। বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারায় সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নতুন একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি স্বীকার করেছেন, অতিরিক্ত বৈঠক ও অপ্রয়োজনীয় প্রতিবেদন জাতিসংঘের কার্যক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলছে।
গুতেরেস জানান, ২০২৪ সালে জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের মোট ২৭ হাজার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাই জাতিসংঘের সচিবালয় তৈরি করেছে ১,১০০টি রিপোর্ট, যার বেশিরভাগই পাঠকের আগ্রহ অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, "অতিরিক্ত সভা ও প্রতিবেদন জাতিসংঘ ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।"
প্রতিষ্ঠালগ্নে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত জাতিসংঘ, সাম্প্রতিক সময়ে গাজা সংকট বা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সংঘাতে কার্যকর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় সংস্থার কাঠামোগত সংস্কারের দাবি দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
২০২৫ সালে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠার ৮০ বছর পূর্ণ হবে। এর আগেই আর্থিক সংকট, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বকেয়া পরিশোধে অনীহা, এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে রয়েছে সংস্থাটি। সাত বছর ধরে জাতিসংঘ তারল্য সংকটে ভুগছে। সেই প্রেক্ষাপটে খরচ কমিয়ে আরও কার্যকর কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যেই চলতি বছরের মার্চে গঠিত হয়েছে UN80 টাস্কফোর্স।
মহাসচিব গুতেরেস বলেন, “জাতিসংঘকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য কম সভা, কম প্রতিবেদন তবু ম্যান্ডেট পূরণ এই পদ্ধতির দিকে যাচ্ছি। ফরম্যাট আরও যুগোপযোগী ও ফলপ্রসূ করতে হবে।”
প্রতিবেদন অনুসারে, জাতিসংঘের শীর্ষ পাঁচটি রিপোর্ট মাত্র ৫,৫০০ বার ডাউনলোড হয়েছে। প্রতি পাঁচটির মধ্যে একটি রিপোর্টের ডাউনলোড সংখ্যা ছিল এক হাজারেরও কম। এমন পরিসংখ্যান জাতিসংঘের কার্যকারিতা ও জনসম্পৃক্ততা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।