বাজারে গেলেই হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। প্রতিদিনের রান্নার প্রয়োজনীয় সবজিই এখন বিলাসপণ্যের মতো মনে হচ্ছে।
প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ৩:২৫:৪৭
বাজারে ঢুকতেই প্রথম ধাক্কা-সবজির দাম শুনলেই চোখ কপালে ওঠে। শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে বটে, কিন্তু দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। রাজধানীর কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর ও যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজির কেজি ৮০ টাকার নিচে নেই। এক কেজি বেগুন ১০০ টাকা, ফুলকপি ৯০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, আর পটলও ৮০ টাকার ওপরে। শুধু আলু আর পেঁয়াজ কিছুটা স্বস্তি দিলেও বাকি সবজির দাম গড়পড়তা পরিবারের জন্য রীতিমতো চিন্তার কারণ।
কেন বাড়ছে সবজির দাম
কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, টানা বন্যা, খরা ও অনিয়মিত আবহাওয়ার প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। তার ওপর পরিবহন খরচ বেড়েছে জ্বালানির দামের কারণে। স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত সবজি পৌঁছাতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল হাসান বলেন, “কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না, কিন্তু ভোক্তা দিচ্ছে আকাশছোঁয়া দাম। এই ফারাক তৈরি করছে দালালি আর মধ্যস্বত্বভোগী।”
ক্রেতাদের হতাশা
মোহাম্মদপুরের এক গৃহিণী সালমা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, “আগে প্রতিদিন তিন-চার রকম সবজি কিনতাম, এখন দুই রকমেই কুলাতে হয়। এই দামে নিয়মিত সবজি খাওয়া সম্ভব নয়।”
বিশ্বের বাজার পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (FAO) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সবজির দামে ২০–৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে গত এক বছরে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক নীতিমালা থাকলে বাংলাদেশে এই চাপ কিছুটা কমানো সম্ভব।
সমাধান কী হতে পারে
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য কেনার ব্যবস্থা, পরিবহন খরচে ভর্তুকি এবং বাজারে কঠোর তদারকি করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। পাশাপাশি শহুরে ছাদবাগান ও গ্রামীণ ক্ষুদ্র কৃষিকে উৎসাহিত করাও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে।
“কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না, কিন্তু ভোক্তা দিচ্ছে আকাশছোঁয়া দাম। এই ফারাক তৈরি করছে দালালি আর মধ্যস্বত্বভোগী।” -ড. আবুল হাসান, অর্থনীতিবিদ