১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিজয়ের বেশে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন। আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে স্বাধীনতাকামী জনতা। একাত্তরের ২৭ এপ্রিল ভারী কামান ও মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করেন। পরে পাকিস্তানি বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে পৌরসভার খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হত।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় হানাদার বাহিনী। পরে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে সন্ধ্যায় পুলিশদের নিরস্ত্র করেন। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি শহর ও নলছিটি উপজেলা হানাদারমুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল বের করেন।
নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, ‘১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে লড়েছিলাম শুধু ভূখণ্ডের স্বাধীনতার জন্য নয়, মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকের এই দিনে আমি স্মরণ করছি সব শহীদদের, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের ইচ্ছা একটাই, নতুন প্রজন্ম দেশকে ভালোবাসুক, স্বাধীনতার ইতিহাস জানুক এবং দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সচেতন থাকুক।’
ঝালকাঠির মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দত্ত বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদাররা যখন এই অঞ্চলে অত্যাচার চালাচ্ছিল, তখন আমাদের হাতে ছিল সামান্য অস্ত্র, কিন্তু সাহস ছিল পাহাড়সম। আমরা জানতাম দেশকে স্বাধীন করতেই হবে। আজকের দিনে আমি সেই শহীদ ভাইদের কথা স্মরণ করছি, যারা রক্ত দিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন।’