আপডেট :
০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৫:৩৯
বরগুনা সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সমাজে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সহকারী শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটনের একটি ভিডিও বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য, বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা এবং বার্ষিক পরীক্ষা নিলে ‘থুথু দিবস’ পালনের হুমকি দিয়েছেন।
জানা গেছে, এ ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর বরগুনা সদর উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের (ডিপিও) নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষক সমিতির এক আলোচনায় কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের উপস্থিতিতে লিটন প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হুমকিসূচক বক্তব্য দেন এবং প্রধান শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করলে তাদের থুথু মারবেন, তাদেরকে আপমান করবেন, বিদ্যালয়ে গিয়ে তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত চাপ প্রয়োগ করিবেন এমন মন্তব্য করেন।
আরও জানা যায়, ওরা কি জানে না আমাদের ১০ম গ্রেড দিলে তোরা তো আরও ওপরে যাবি, তোদের তো লস নেই, এরপরও যদি ওরা দায়িত্ব পালন করে তবে আমরা ওদের মুখে থুথু দিবস পালন করব। উক্ত শিক্ষকের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণের ফলে প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজনের হুমকি রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একে অপরের পরিপুরক। আমরা উভয় পক্ষ আন্তরিক পরিবেশে একতাবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের কাজ সম্পাদন করে থাকি। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণের কারণে আন্তরিকতার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
প্রধান শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চলমান কর্মবিরতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে লিটন প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন না করার জন্য চাপ প্রয়োগের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি দায়িত্ব পালন করলে মুখে থুথু দেওয়ার মতো অবমাননাকর মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এক প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা সরকারি দায়িত্ব পালন করবই। পরীক্ষা না নিলে অভিভাবকেরাই ক্ষুব্ধ হতেন। কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষক এভাবে হুমকি দিতে পারে, এটা আমাদের জন্য অপমানজনক ও অস্বস্তিকর।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক মীর মোস্তাফিজুর রহমান লিটন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ভিডিও বিকৃত করে ছড়িয়ে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু জাফর মো. ছালেহ জানান, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এমন আচরণ বিদ্যালয়ের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ও শিক্ষক পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।