হলিউডের ঝলমলে দুনিয়ায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আলো ছড়ানো লনি অ্যান্ডারসন বিদায় নিলেন জীবনের মঞ্চ থেকে।
প্রকাশিত : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২:৫৮:৫০
‘WKRP in Cincinnati’-এর গ্ল্যামারাস রিসেপশনিস্ট জেনিফার মার্লো চরিত্রে একসময় মুগ্ধ করেছিলেন বিশ্বজুড়ে দর্শক। ৭৯ বছর বয়সে সেই কিংবদন্তি অভিনেত্রীর জীবনের রঙিন অধ্যায় শেষ হলো। হলিউডের স্বর্ণযুগের শেষ প্রান্তে যারা বেড়ে উঠেছেন, তাদের স্মৃতিতে লনি অ্যান্ডারসনের নাম এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। ১৯৭৮ সালে সিবিএস সিটকম WKRP in Cincinnati দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান তিনি। জেনিফার মার্লো চরিত্রে তাঁর অনন্য গ্ল্যামার, বুদ্ধিমত্তা ও কমেডি টাইমিং তাঁকে দ্রুতই দর্শকের প্রিয় মুখে পরিণত করে। লনির ক্যারিয়ার কেবল টেলিভিশনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। চলচ্চিত্র, থিয়েটার এবং পরবর্তীতে অতিথি চরিত্রেও তিনি সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবন, বিশেষ করে বার্ট রেনল্ডসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, প্রায়ই হলিউড গসিপ ম্যাগাজিনের শিরোনাম দখল করত। তবে তিনি সবসময়ই চেষ্টা করেছেন নিজেকে পেশাদারিত্বের মাধ্যমে প্রমাণ করতে। চলচ্চিত্র সমালোচক হ্যারল্ড জ্যাকসন বলেন, “লনি অ্যান্ডারসন ছিলেন শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নন, বরং নারীর আত্মবিশ্বাস ও শক্তির প্রতিচ্ছবি। তাঁর চরিত্রগুলোতে আমরা দেখেছি কীভাবে গ্ল্যামার ও বুদ্ধিমত্তা একসঙ্গে কাজ করে।”
বিশ্ব বিনোদন ইতিহাসে তাঁর অবস্থান অনেকটা মেরিলিন মনরো বা ফারাহ ফসেটের মতো যারা তাঁদের সময়ের সাংস্কৃতিক প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। লনি নিজেও বারবার বলেছেন, সৌন্দর্যই তাঁর ক্যারিয়ারের একমাত্র মূলধন নয়, বরং তা ছিল দর্শকের কাছে পৌঁছানোর দরজা। ১৯৮০ ও ৯০–এর দশকে, যখন টেলিভিশন তারকাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি পাওয়া কঠিন ছিল, তখন লনি তা অর্জন করেছিলেন নিজের ব্যক্তিত্ব ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নানা সামাজিক কাজেও যুক্ত হন, বিশেষ করে ফুসফুসের রোগ ও শিশু কল্যাণমূলক প্রকল্পে। ৭৯ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুর খবরে হলিউডের সহকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। অনেকেই লিখেছেন, লনির হাসি ও উজ্জ্বল উপস্থিতি চিরকাল তাঁদের স্মৃতিতে রয়ে যাবে। জীবনের মঞ্চ থেকে নেমে গেলেন লনি অ্যান্ডারসন, কিন্তু তাঁর রঙিন অধ্যায়ের গল্প থেকে যাবে বিনোদন জগতের ইতিহাসে প্রেরণার আলো হয়ে, নতুন প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল মানদণ্ড হয়ে।
"লনি অ্যান্ডারসন ছিলেন শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নন, বরং নারীর আত্মবিশ্বাস ও শক্তির প্রতিচ্ছবি।" — হ্যারল্ড জ্যাকসন, চলচ্চিত্র সমালোচক