বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশির চাচাতো ভাই আসিফ কুরেশির প্রাণ হারানো ঘটনাটি প্রতিবেশী বিরোধের বুনো রূপ ধারণ করেছে।
প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ২:১৯:০৭
নিউইয়র্ক থেকে দিল্লি: পার্কিং নিয়ে ক্ষোভের আন্তর্জাতিক রূপ
বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশির পরিবারের কাছে এক ভয়াবহ ধাক্কা এসেছে সম্প্রতি। তার চাচাতো ভাই, আসিফ কুরেশি, দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার একটি পার্কিং সংক্রান্ত দ্বন্দ্বে প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার সময় জঙ্গপুরা ভোগাল বাজার লেনের একটি স্কুটার পার্কিং নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে শুরু হওয়া বিবাদ রূপ নিল রক্তক্ষরণে। পার্কিং বিষয়ক বিরোধ একাধিক দেশের শহরেই দেখা যায়। বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ নগরায়ণে জায়গার সংকট এবং পারস্পরিক অহংকার যখন যুক্ত হয়, তখন সামান্য বিষয়ও বড় সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিউইয়র্ক থেকে দিল্লি, লন্ডন থেকে মুম্বাই এই ধরনের ঘটনা সময় সময় ঘটেছে, যা সামাজিক সহনশীলতার অভাব ও যোগাযোগের ব্যর্থতার দিকেই ইঙ্গিত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্কিং নিয়ে সংঘাত মোকাবিলায় প্রয়োজন স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা, যাতে সুষ্ঠু ও নিরাপদ পার্কিং ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়। “সহজেই ছোটখাট বিষয়ে উত্তেজনা বা বিরোধ গড়ে ওঠে যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে বিপদ ডেকে আনে,” মন্তব্য করেছেন সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ড. রিয়া সেন।
পরিবারের বেদনা ও সমাজের প্রতিবিম্ব
আসিফ কুরেশির আকস্মিক মৃত্যু কেবল তার পরিবারের জন্যই নয়, পুরো সমাজের জন্যও একটি সতর্কতা। পার্কিংয়ের ছোট বিবাদে এত বড় রক্তক্ষরণ যেন আমাদের মানবিকতা ও সহনশীলতার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রতিবেশী সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন কমিয়ে আনা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ খোঁজা আজকের সময়ের জরুরি দাবি। বলিউড শিল্পী হুমা কুরেশি এই দুর্ঘটনায় শোকাহত হয়ে টুইট করেছেন, “পরিবারের প্রতি এই বিশাল ক্ষতি মেনে নেওয়া খুব কঠিন। শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা আমাদের সবারই হৃদয়ে থাকতে হবে।”
বিশ্বে পার্কিং বিরোধের মর্মান্তিক উদাহরণ
বিশ্বের বিভিন্ন বড় শহরে পার্কিং বিরোধের কারণে এমন ঘটনা বিরল নয়। আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে কয়েক বছর আগে পার্কিং নিয়ে বিরোধে দুজনের মৃত্যু হয়; ব্রাজিলের সাও পাওলোর এক এলাকায় একই কারণে সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হন। এসব ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সামান্য বিষয়কেও যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির সঙ্গে মোকাবিলা করা না হয়, তবে তা ভয়াবহ পরিণতির কারণ হতে পারে।
শান্তির বার্তা এবং দায়িত্ববোধ
আসিফ কুরেশির মৃত্যু আমাদের শেখায়, সহনশীলতা ও শিষ্টাচারের বিকল্প নেই। পার্কিং বা যেকোনো ছোটখাট বিষয়কে বড় করে তোলা ঠিক নয়। প্রশাসনিক এবং সামাজিক পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে যাতে এই ধরনের সংঘর্ষ প্রতিরোধ করা যায়।
“সহনশীলতা না থাকলে ছোট বিষয়ও হয় বড় ঝগড়া, আর ঝগড়া থেকে আসে অপ্রত্যাশিত মর্মান্তিকতা।” – ড. রিয়া সেন, সামাজিক মনোবিজ্ঞানী
প্রয়োজনীয় সহানুভূতিতে আমরা স্মরণ করি আসিফ কুরেশির মতো প্রিয়জনদের যাদের জীবন অকারণে শেষ হলো। পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সংযমের মাধ্যমে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের পথে এগিয়ে যেতে পারি।