অগ্নিদগ্ধ রোগীর সুস্থতা শুধু চিকিৎসার ওপর নির্ভর করে না, বরং সঠিক খাদ্যাভ্যাসও দ্রুত আরোগ্যের বড় সহায়ক।
প্রকাশিত : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১:৩১:৪৮
অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় ওষুধ, ড্রেসিং কিংবা সার্জারির পাশাপাশি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পুষ্টি। সঠিক খাবার শুধু শক্তি জোগায় না, বরং ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, দগ্ধ রোগীর শরীরে প্রোটিন ও ক্যালোরির চাহিদা স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। তাই চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীর খাবার তালিকায় রাখতে হবে কিছু বিশেষ খাবার।
১. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন ক্ষত নিরাময়ের জন্য অপরিহার্য। এটি নতুন টিস্যু তৈরি ও ক্ষতস্থান মেরামতে সহায়তা করে। মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, ডাল ও সয়াবিন প্রোটিনের ভালো উৎস। চিকিৎসকরা বলেন, দগ্ধ রোগীর প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি রাখতে হবে।
২. ভিটামিন সি ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরি ও ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে, আর জিঙ্ক শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লেবু, কমলা, পেয়ারা, টমেটো ও বাদামে এই পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ শাকসবজি
বেগুনি বাঁধাকপি, পালং শাক, গাজর ও ব্রকলি শরীরে প্রদাহ কমায় এবং ক্ষতস্থানকে দ্রুত সুস্থ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি রোধ করে, যা দগ্ধ রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
৪. স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে ও ত্বক পুনর্গঠনে সহায়তা করে। সামুদ্রিক মাছ, অলিভ অয়েল ও ফ্ল্যাক্সসিড তেলে এই ফ্যাট পাওয়া যায়।
৫. পর্যাপ্ত পানি ও তরল
দগ্ধ রোগীর শরীরে তরল ঘাটতি দ্রুত পূরণ করা জরুরি। পানির পাশাপাশি স্যুপ, ফলের রস ও ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ORS) ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক।
বিশেষজ্ঞ মতামত
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল ইসলাম বলেন, “অগ্নিদগ্ধ রোগীর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাসই ক্ষত নিরাময়ের গতি দ্বিগুণ করতে পারে। শুধু ওষুধ নয়, খাবারই এই চিকিৎসার অর্ধেক।”
গ্লোবাল রেফারেন্স
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিকও তাদের মেডিকেল গাইডলাইনে বলেছে, দগ্ধ রোগীদের জন্য উচ্চ প্রোটিন, উচ্চ ক্যালোরি ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাদ্য পরিকল্পনা আরোগ্যের জন্য অপরিহার্য।
“অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসার অর্ধেক নির্ভর করে সঠিক খাদ্যের ওপর।” ডা. আরিফুল ইসলাম