আপডেট :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৯:৪৬
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দল থেকে তারেক রহমানের নিরাপত্তার সব প্রস্তুতি নিলেও দুশ্চিন্তার জায়গা রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারে ভূমিকাকে মুখ্য মনে করছেন তারা।
আর এসব বিবেচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিরাপত্তায় কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তারেক রহমান নিজেই দেশে ফেরার ঘোষণা দেওয়ায় নিশ্চিত হয়েছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে ফিরছেন। বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সেদিন দুপুর ১২টা নাগাদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটেই তিনি আসছেন। ফ্লাইটটির ল্যান্ডিং টাইম ১১টা ৫৫ মিনিট।’
দেশে ফিরে গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান। ইতোমধ্যে বাড়িটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাড়ির পুরো আঙিনা ও আশপাশের সড়কে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। দেয়ালজুড়ে তারকাঁটা ও নিরাপত্তা রক্ষীদের কঠোর পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
ভূরাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. জগলুল আহসান মনে করেন, তারেক রহমানের রাজনৈতিক অবস্থান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিগুলোর স্বার্থের সঙ্গে জড়িত।
তার মতে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ, সেটিকে সামনে এগিয়ে নিতে গেলে কোনো না কোনো আঞ্চলিক শক্তির স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত—এই তিন শক্তিই আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে সক্রিয়। বাংলাদেশ এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক পয়েন্ট। ফলে এখানে নিজেদের অনুকূল সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা তারা সবসময়ই করবে।
সম্প্রতি ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। পাশাপাশি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জোরদারে কূটনৈতিক চ্যানেল ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. জগলুল আহসান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে এসএসএফ প্রটোকল দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্র চাইলে তারেক রহমানকেও একই ধরনের সরকারি নিরাপত্তা বা প্রটোকলের আওতায় আনতে পারে। এখানে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি, ইন্টারনাল সিকিউরিটি এবং সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সমন্বিত ভূমিকা জরুরি।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতার পালাবদলের রাজনীতি যখন স্পষ্ট, এবং সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠছে, তখন বিএনপির প্রধান নেতার নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব—সেই প্রশ্নই এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে।