প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২:১৯:১৬
২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই পাঁচ বছরে লিভারপুলের মাঝমাঠের ভরসা ছিলেন জাবি আলোনসো। তারপর যোগ দিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। খেলোয়াড় জীবন শেষে আলোনসোই এখন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ। সেই আলোনসো আজ ফিরছেন প্রিয় অ্যানফিল্ডে। চ্যাম্পিয়নস লিগে লিভারপুলকে হারানোর মিশন নিয়ে ডাগআউটে দাঁড়াবেন তিনি। এই গ্যালারি তার জন্য আজ চ্যান্ট করবে না। বরং লাল সমুদ্রের গর্জনে ভয় ধরিয়ে দিতে পারে স্প্যানিশদের মনে। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের জন্য পুরো বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
চলতি সিজনে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের সময়টা বেশ খারাপই যাচ্ছে। সর্বশেষ আট ম্যাচে মাত্র দুটি ম্যাচে। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে কিঞ্চিৎ স্বস্তি ফিরেছে অল-রেড শিবিরে। অন্যদিকে ঠিক বিপরীত অবস্থা আছে রিয়াল মাদ্রিদ। আলোনসোর নেতৃত্বে গত সিজনের ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন রূপে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই সিজনে ব্লাংকোসরা হেরেছে একটি মাত্র ম্যাচ। অ্যাতলেটিকা মাদ্রিদের বিপক্ষে ৫-২ গোলের সেই পরাজয় কাটিয়ে তারা জয়ের ধারায় ফিরেছে অনেক আগেই।
গত সপ্তাহে বার্সার বিপক্ষে এল ক্ল্যাসিকো জিতে ভীষণভাবে উজ্জীবিত রিয়াল শিবির। চলতি সিজনে ১৪ ম্যাচের মধ্যে ১৩টিতে জিতেছে রিয়াল। লা লিগায় ১১ ম্যাচের ১০টিতে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় ছিনিয়ে এনেছে জাবি আলানসোর শিষ্যরা। তাদের এই দুরন্ত ফর্মের মূল কারিগর কিলিয়ান এমবাপ্পে। চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। লা লিগায় এমবাপ্পের গোল এখন ১৩টি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আছে আরও ৫টি। লিভারপুলের সামনে আজ তিনিই মূল হুমকি।
কাগজে-কলমে লিভারপুল কিন্তু বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর ক্লাব। দুরন্ত দাপটে সিজন শুরু করে সে চিহ্নই তারা রেখেছিল। কিন্তু আচমকা ছন্দপতন ঘটে তাদের। প্রিমিয়ার লিগে টানা চার ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক হারের সঙ্গে লিগ কাপ থেকে ছিটকে গেছে তারা। দলবদলে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি খরচ করে দারুণ সব প্রতিভা নিয়ে এসেছেন কোচ আর্নে স্লট। কিন্তু রিটজ, ইসাক, একিতিকিরা একসঙ্গে ছন্দ হারিয়ে বসেছেন। সে সঙ্গে অভিজ্ঞ মোহামেদ সালাহও প্রত্যাশা অনুযায়ী গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না।
গত শনিবার অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে গোলখরা কাটিয়েছেন সালাহ। সেটি ছিল লিভারপুলের জার্সি গায়ে মিসরীয় তারকার ২৫০তম গোল। মাইলফলক স্পর্শ করার পর সালাহর প্রত্যাশা, এই অর্জন তিনি এবং তাঁর দলে পুনর্জাগরণ ঘটাবে। দুই দলেরই চোট সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে লিভারপুল আজ আলেক্সান্দার এসাক, অ্যালিসন বেকার, কার্টিস জোন্স ও জেরেমি ফ্রিমপংকে পাচ্ছে না। রিয়াল পাচ্ছে না দানি কারভাহাল, এন্টিনিও রুডিগার ও ডেভিড আলাবাকে।
অন্যদিকে ঘরের ছেলে আর্নোল্ড ফিরে আসবেন প্রতিপক্ষ হিসবে। গত সিজনে দল বদলে লিভারপুল ক্লাবকে বিদায় জানিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন তিনি। চলতি সিজনে চোটের কারণে বেশ কিছুদিন বাইরে থাকার পর আজ মূল একাদশে দেখা যেতে পারে তাকে। তিনি জানান, ‘যখন ড্র ঘোষণা করা হয়েছিল, আমার মনে হয় সবাই জানত যে এটা ঘটবে। ম্যাচটি নির্ধারিতই ছিল। স্পষ্টই তারা (লিভারপুল) চমৎকার একটা দল। আমি জানতাম যে কোনো সময়ে আমি সেখানে (অ্যানফিল্ড) ফিরে যাব অথবা লিভারপুলের বিপক্ষে খেলব। সত্যিই মিশ্র অন্যভূতি হচ্ছে। আমার মনে হয় এটা খুব কঠিন একটা ম্যাচ হবে।
ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন লিভারপুলের একাডেমি থেকে, তারপর প্রায় বিশ বছর কাটিয়েছেন অল-রেডদের হয়ে। তাই মিশ্র অনুভূতির বিষয়টা একেবারেই স্বাভাবিক বললেও মন্দ শোনায় না।