প্রকাশিত :
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭:৩১
বিএসএফের অমানবিক পুশইনের শিকার বহুল আলোচিত অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুন ও তার পরিবারকে মানবিক বিবেচনায় নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর (আইসিপি) এলাকায় আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের (বিএসএফের) কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।
বিজিবি জানায়, গত ২৫ জুন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ছয়জন ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। পরে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করলে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আটক করে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠায়।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তার এক নাবালক সন্তানও ছিল। মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত গত ২ ডিসেম্বর চারজনকে স্থানীয় জিম্মায় মুক্তি দিয়ে কূটনৈতিক উদ্যোগে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি সদর দপ্তর ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগের ভিত্তিতে আজ সোনালী খাতুন ও তার নাবালক ছেলে সাব্বির শেখকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়। বাকী চারজন বাংলাদেশে তাদের এক আত্মীয়ের জিম্মায় রয়েছেন।
হস্তান্তর শেষে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিএসএফের এ ধরনের অমানবিক পুশইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকট সৃষ্টি করছে এবং দুই দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করাই ছিল আমাদের প্রধান বিবেচনা।
বিজিবি আশা প্রকাশ করে জানায়, ভবিষ্যতে বিএসএফ পুশইনের মতো আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করবে এবং সীমান্ত এলাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ ও মানবিক আচরণ বজায় রাখবে।