আপডেট :
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪:৫৬
রাজশাহী তানোরে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে মারা যাওয়া শিশু সাজিদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নেককিড়ি কবরস্থান-সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে শিশু সাজিদের দাফন সম্পন্ন হয়।
শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম, প্রতিবেশীর কান্নায় সকাল থেকেই ভারী হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসতে থাকে সেই ঘোষণা—‘কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসী রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশু সন্তান সাজিদ মারা গেছে’।
এদিন মসজিদের ঘোষণা শুনে থেমে যায় সব কাজকর্ম। সবাই গ্রামের রাস্তা ধরে গায়ে পাঞ্জাবি জড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে আসেন সাজিদের বাড়ির দিকে। তারা একবার দেখতে চান সেই নিষ্পাপ মুখটা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন গভীর নলকূপের ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে শিশু সাজিদকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে গেল চারপাশে। তার মা-বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন-করছেন আহাজারি। লোকজন ধরে রেখেছিল তাকে, কিন্তু কান্না থামাতে পারেনি কেউ।
জানাজার নামাজের ইমামতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুলল দোয়ার ভঙিতে। হাজারো কণ্ঠে দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই সাজিদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন। একইসঙ্গে এ দোয়াও করেন, যেন তার পরিবারকে আল্লাহ ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন।
জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো তখন শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজা—যেখানে অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম, এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখেনি গ্রামবাসী।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করে। এরপর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।