প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলেছে কোরবানির পশুর দাম নির্ধারণের চিত্র
প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২৫, ১:২৬:৪১
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলেছে কোরবানির পশুর দাম নির্ধারণের চিত্র
ঢাকা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের গরুর হাটগুলোতে এবার নজরকাড়া পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। প্রচলিত দমকা দরদাম আর ময়দানে থাকা ‘চোখে চোখে’ দর নির্ধারণের বদলে এবার মোবাইল ফোনের স্ক্রিনেই নির্ধারিত হচ্ছে দাম। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার কোরবানির পশু কেনাবেচায় নতুন এক রূপ নিচ্ছে।
টেকনোলজির ছোঁয়া, গরুর হাটে ডিজিটাল দরদাম
বাংলাদেশের প্রান্তিক কৃষক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত অনেকেই এবার মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গরুর মূল্য যাচাই ও দরদাম করছেন। মোবাইলের স্ক্রিনে চলে আসছে বাজারের সাম্প্রতিক গড় দাম, পশুর ওজন, স্বাস্থ্যগত তথ্য এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের রিভিউ। ফেসবুকের পাশাপাশি কিছু জনপ্রিয় বাজার ভিত্তিক অ্যাপ যেমন “গরুছাপ”, “খাসি কোরবানী” ও “বাজারবিডি” বাজারের তথ্য সরবরাহ করছে। এতে করে বিক্রেতারা সঠিক মূল্য পেয়ে থাকেন, আর ক্রেতারাও বঞ্চনা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা
নরসিংদীর বড় গরুর হাটের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন,“আগে দরদাম করতে অনেক সময় লেগে যেত, আর অনেক সময় বেচাকেনায় ঠকতেও হতো। এখন মোবাইল দিয়ে বাজারের দাম দেখে দর দেয়া যায়, সময়ও বাঁচে, সুবিধাও বেশি।” তবে, কিছু ক্রেতার পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রযুক্তির সঙ্গে মদদ দিয়ে আবার দাম উঠানামার সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ কঠিন হতে পারে।
প্রশাসনের করণীয় ও বাজার নিয়ন্ত্রণ
পশু বাজার কর্তৃপক্ষ বলছে, ডিজিটাল দরদামের ফলে বাজারে স্বচ্ছতা এসেছে এবং মান নিয়ন্ত্রণ সহজ হচ্ছে। তবে, সঠিক তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কিছু প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জানান,“আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে উৎসাহিত করছি যাতে তারা সরকারি তথ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজারকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করে তুলতে পারে।”
প্রযুক্তি ও কৃষি বাজারের ভবিষ্যত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল দরদাম কেবল কোরবানির বাজারে নয়, দেশের সব ধরনের কৃষি পণ্যের বাজারেও একটা যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা। এর ফলে মধ্যস্থতাকারীদের সংখ্যা কমে আসবে, ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বাড়বে।
২০২৫-এর কোরবানির বাজারে মোবাইলের মাধ্যমে দরদামের প্রবণতা শুধু সময়ের দাবি নয়, এটি প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষি অর্থনীতির সেতুবন্ধন। যদিও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তবুও এই ‘ডিজিটাল দরদাম’ কোরবানির বাজারকে আরো আধুনিক, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করে তুলবে এটাই প্রত্যাশা।