প্রকাশিত :
২৯ জুন ২০২৫, ৪:২৮:৩৪
বাণিজ্য অচলাবস্থার মূল চিত্র:
চট্টগ্রাম ও বেনাপোল বন্দরে পণ্য আটকে পড়েছে:
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ১২ হাজার কনটেইনার আমদানিপণ্য খালাস হয়নি। বেনাপোল, সোনামসজিদ ও ভোমরা স্থলবন্দরেও পরিস্থিতি প্রায় একই।
পণ্য সরবরাহে ধস:
অভ্যন্তরীণ পরিবহনে ট্রাক-লরি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় রাজধানীসহ অন্যান্য শহরে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, যার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।
রপ্তানি কার্যক্রমে বিপর্যয়:
তৈরি পোশাকসহ প্রধান রপ্তানি খাতের পণ্য বন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারায় বিদেশি ক্রেতারা সময়মতো পণ্য পাচ্ছেন না। এতে অনেকে অর্ডার বাতিলের হুমকি দিচ্ছেন।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর বক্তব্য:
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন:
প্রতিদিন আমদানি-রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ লেনদেন মিলিয়ে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর হস্তক্ষেপ করতে হবে।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ জানিয়েছে, গার্মেন্ট পণ্য সময়মতো না পৌঁছালে চুক্তি বাতিলের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎসকে।
অর্থনীতিবিদদের পর্যবেক্ষণ:
অর্থনীতিবিদ ড. ফারুক হোসেন বলেন,
দ্রব্যমূল্য অস্থিতিশীল, আমদানি আটকে যাওয়া এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের স্থবিরতা—সব মিলিয়ে দেশ এক গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে।
তাঁর মতে, এই ক্ষতির প্রভাব শুধু সরাসরি নয়, দীর্ঘমেয়াদে উৎপাদন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
পরিস্থিতি উত্তরণে করণীয়:
- সরকারকে অবিলম্বে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।
- বন্দর ও পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী বা র্যাবের সহায়তা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে।
- রপ্তানি আদেশ রক্ষা ও আন্তর্জাতিক সুনাম ধরে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে রপ্তানি পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে।
বর্তমান অচলাবস্থা শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে এর প্রভাব আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠবে, যার দায় সরকার, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।