আপডেট :
০১ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৪:১৬
চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, ডিম, মাছ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছে চরম সংকটে। আয় বাড়েনি, অথচ ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ।
বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণ নেই
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের প্রায় সব বড় শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের কেজি ৬৫–৭৫ টাকা, ডালের কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি, ভোজ্যতেল ১৭০–১৮০ টাকা, ডিম হালি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
বাজারে গেলে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কী কিনব, আর কী ফেলে যাব—এই হিসেবেই জীবন কাটছে।
কেন বাড়ছে দাম?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি কারণ একসঙ্গে কাজ করছে:
- ডলারের অস্থিরতা ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি
- সরবরাহ সংকট ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়া
- পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মজুদদারদের কারসাজি
- ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) কার্যক্রম পর্যাপ্ত নয়
সরকারের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বাজার নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, মজুতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান এবং টিসিবি-র মাধ্যমে পণ্য বিক্রি চালু রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। টিসিবি পণ্য কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের আর্তনাদ
অফিস সহকারী, গার্মেন্টস শ্রমিক, ছোট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বেসরকারি চাকরিজীবী—সবাই এখন হিসেব কষে খরচ করছেন। অনেকে খাবারের মান ও পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন, সন্তানদের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না।
একজন স্কুলশিক্ষক বলেন,
বাচ্চাদের দুধ-ফল দিতে পারি না। বাজারে গিয়ে শুধু দুঃখ বাড়ে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে ভোক্তাদের উপর চাপ বাড়তেই থাকবে। নির্ভরযোগ্য বাজার নজরদারি, সরকারি মজুদ জোরদার ও ন্যায্য মূল্যে পণ্যের সরবরাহ জরুরি বলে মনে করছেন তারা।