বাংলাদেশে ভোটের তারিখ অজানা, নেপালে শপথ নিয়েই ঘোষণা-এটাই পার্থক্য!
নেপালে সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে নতুন আশা, তরুণদের বোধোদয়ে গণতন্ত্রের পথে অগ্রযাত্রা
প্রকাশিত :
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৭:২৯
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। শপথ নিয়েই তিনি সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ পরবর্তী নির্বাচন। আমার ধারণা এই নির্বাচনে তরুণরা ভালো করবে। আসলে নির্বাচন গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো কোন পদ্ধতি এখনো পৃথিবীতে আসেনি। অথচ আমাদের দেশে এক বছরের বেশি সময় আগে সরকার এসেছে এবং এখনো ভোটের সুনির্দিষ্ট তারিখ কেউ জানে না। পার্থক্যটা এখানেই। পার্থক্যটা গড়ে দেবেন সুশীলাই। তাঁর অতীত ইতিহাস তাই বলে।
জেন–জিদের পছন্দের প্রার্থী সুশীলা কারকির বয়স ৭৩ বছর। নেপালে বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছরেরও বেশি সময়ের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হন তিনি ২০১৬ সালে। নেপালের সাবেক ক্ষমতাসীন জোটের (নেপালি কংগ্রেস এবং মাওইস্ট সেন্টার) সংসদ সদস্যরা সংসদে সুশীলা কারকির বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব দাখিল করলে তাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তবে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে এই অভিশংসন প্রস্তাবকে অকার্যকর ঘোষণা করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি চোলেন্দ্র শমসের রানা। আজকে দেখেন দেশটির ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে, আনুষ্ঠানিক নিয়োগের মাধ্যমে, প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী এই সুশীলা।
খেয়াল করে দেখুন, বাংলাদেশের মতো নেপালেও তরুণরা দুর্নীতি অবসানের জন্য এবং জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্য তারা রাজপথে নেমেছিল। ব্যাপকভাবে ভাঙচুর আগুনের একদিন পরেই নেপালের তরুণরা প্রতিবাদ করে বলেছে তাদের আন্দোলন অহিংস ছিল। যারা হামলা ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে তারা অনুপ্রবেশকারী এবং আন্দোলন ছিনতাই করতে চাইছে। তরুণরা জানিয়েছেন তাদের আর কোনো বিক্ষোভের পরিকল্পনা নেই এবং প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। এরপর থেকে মব ভাঙচুর আগুন বন্ধ।
আমি মনে করি নেপালের তরুণদের বোধোদয় ও সুশীলার মতো প্রধানমন্ত্রী দেশটাকে বাঁচিয়ে দেবে। শ্রীলংকার মতো নেপালের পরিস্থিতিও কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং ঘুরে দাঁড়াবে আশা করি যেটা বাংলাদেশে এক বছরেও হয়নি। আমাদের হবেও না যদি না বোধোদয় হয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদের বোধ দিক! মানবিক বোধ, আইনের শাসনের বোধ, মবের বিরুদ্ধে বোধ, ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার বোধ!
শরিফুল হাসান এর ফেসবুকে প্রোফাইল থেকে নেয়া।