প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২৬:১৩
সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখনো তপশিল বা দলীয় ইশতেহার ঘোষণা না হলেও নির্বাচন ঘিরে নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন দলগুলোর নেতাকর্মীরা। তাদের দেওয়া এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে এমন কিছু থাকছে যা নিয়ে রীতিমতো সমালোচনায়ও পড়তে হচ্ছে দলগুলোকে।
সম্প্রতি কর্মজীবী নারীদের কর্মঘণ্টা কমানোর প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। মন্তব্যটি ঘিরে অনেকেই কথা বলেছেন। করেছেন সমালোচনাও। এমনকি পাল্টা আক্রমণও করতে দেখা গেছে বিএনপিকে।
তবে রাজনৈতিক রেষারেষির বাইরেও প্রশ্ন আসে নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার কথার পেছনে উদ্দেশ্য কী বা এর যৌক্তিকতা কতটুকু।
কর্মঘণ্টা কমিয়ে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব কি না, দেশের বিশাল এই শ্রমশক্তির কর্মঘণ্টা কমানো কিংবা ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে কতটা যৌক্তিক–– এমন নানা বিষয় ঘুরেফিরেই আসছে সাধারণ মানুষের আলোচনার।
আবার এমন প্রশ্নও উঠছে চটকদার এই বক্তব্য দিয়ে নারীদের হাতিয়ার করে ভোটের রাজনীতিতে এগিয়ে থাকার চেষ্টাও চলছে কি না।
এমন প্রশ্নে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার আলোচনা কেবল রাজনৈতিক প্রচারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের শঙ্কা, বাস্তবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে নারীর জন্য কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ আরও সংকুচিত হবে।
এছাড়া, নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ভর্তুকি দিতে হলে, সরকারকে যে পরিমাণ অর্থ এই খাতে বরাদ্দ করতে হবে সেই সক্ষমতা বা যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, নারীদের পাঁচ কর্মঘণ্টার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুধু গার্মেন্টস সেক্টরেই অন্তত ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, নারীদের কর্মঘণ্টা না কমিয়ে বরং কর্মক্ষেত্রে বেতন, পদোন্নতিসহ নানা বিষয়ে তাদের প্রতি যে বৈষম্য রয়েছে, সেটি কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন।
জামায়াত কী বলছে?
এদিকে, রাজনৈতিক আক্রমণ ও নারী অধিকারকর্মীদের সমালোচনায় পাল্টা প্রশ্ন করছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, যারা নারী অধিকারের কথা বলছে তারা নারীদের জন্য কী অধিকার অর্জন করতে পেরেছে? তিনি যুক্তি দেন, পাঁচ ঘণ্টা কাজ করার মাধ্যমে অন্য বেকার যারা আছেন তাদেরও কর্মসংস্থান হবে।
হামিদুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলে কেউ সমালোচনা করলে সেটা তাদের এজেন্ডা। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বরং এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নারীদের জন্য আরও কর্মসংস্থান তৈরি করছে।
সরকারের ভর্তুকি নিয়ে অর্থনীতিবিদদের পাল্টা প্রশ্ন ছুরে এই জামায়াত নেতা বলেন, দেশ থেকে যখন হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে তখন তারা কোথায় ছিলেন?