প্রকাশিত :
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৭:৫৫
হজরত মুয়াবিয়া ইবনে মুয়াবিয়া আলমুযানি আললাইছি (রা.) ইন্তেকাল করলে ৭০ হাজার ফেরেশতাসহ জিবরাইল (আ.) নবীজির কাছে আগমন করেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরাইল (আ.) এবং এসব ফেরেশতাদের নিয়ে তার জানাজায় শরিক হন।
নামাজ শেষ হলে নবীজি জিবরাইল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করেন, হে জিবরাইল! কোন আমলের মাধ্যমে মুয়াবিয়া ইবনে মুয়াবিয়া মুযানি এ উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে?
জবাবে জিবরাইল (আ.) বলেন, এ মর্যাদা লাভের কারণ হলো, সে দাঁড়িয়ে, বসে, হেঁটে হেঁটে, সওয়ারিতে (বাহনে চড়া অবস্থায়) তথা সর্বাবস্থায় সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করত। (মুজামে কাবির, হাদিস : ৭৫৩৭)
সুরা ইখলাসের ফজিলত
সুরা ইখলাস কোরআনের ক্ষুদ্র সুরাগুলোর অন্যতম। সুরা কাওসারের পর এই সুরাই সবচেয়ে ছোট। সুরা ইখলাস পবিত্র কোরআনের ১১২ নম্বর সুরা। ইখলাস অর্থ গভীর অনুরক্তি, একনিষ্ঠতা, নিরেট বিশ্বাস, খাঁটি আনুগত্য, ভক্তিপূর্ণ উপাসনা। এই সুরা হিজরতের আগে মক্কার প্রথম যুগে অবতীর্ণ হয়, সুরাটি সুরা নাসের পরে। সুরা ইখলসের আয়াত সংখ্যা ০৪। রুকুর সংখ্যা একটি।
ইখলাস বলা হয়, শিরক থেকে মুক্ত হয়ে তাওহিদ বা এক আল্লাহর ওপর নিরেট বিশ্বাসী হওয়াকে। এ সুরার মর্মার্থের ভিত্তিতে নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইখলাস।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে মহানবী (সা.)-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়। তখন মহানবী (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ! যার কুদরতের হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১৩)
একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদের একদল সৈনিককে যুদ্ধে পাঠান। তাদের একজনকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। তিনি যুদ্ধকালীন দীর্ঘ সময়ে কেবল সুরা ইখলাস দিয়ে নামাজ পড়িয়েছেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর সৈন্যরা মহানবী (সা.)-কে সে ব্যাপারে অবহিত করেন। তখন নবী কারিম (সা.) তাদের বলেন, ‘তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করো— কেন সে এরূপ করেছে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলে— সেনাপতি তাদের জানান, এ সুরায় আল্লাহর গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে। তাই আমি এ সুরাকে ভালোবাসি।
মহানবী (সা.) তখন সাহাবিদের বলেন, ‘তোমরা তাকে গিয়ে বলো, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৭৫)