প্রকাশিত :
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:১৩:৪৮
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আগামীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সংসদ সদস্য ইমরান মাসুদ। বলেন, তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি ‘চূড়ান্ত ও সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা’ নেবেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) কংগ্রেসের এই সাংসদ এ কথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এ সময় বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা’র বিষয়ে যথেষ্ট জোরালো অবস্থান না নেওয়ার অভিযোগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে লক্ষ্য করে বিজেপির সমালোচনা নাকচ করে মাসুদ দাবি করেন, বাংলাদেশ যখন সর্বশেষ একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছিল, তখন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই প্রথম ও স্পষ্টভাবে কথা বলেছিলেন।
বাংলাদেশে হিন্দু দিপুকে গণপিটুনির ঘটনার আগে তার শেষ মুহূর্তের ভিডিও প্রকাশের প্রসঙ্গ টেনে মাসুদ বলেন, ‘গতবার বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়েছিল, তখন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই সর্বাগ্রে আওয়াজ তুলেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করুন, তারপর দেখুন তিনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানান, ঠিক যেমন ইন্দিরা গান্ধী দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী যেমন পাকিস্তানকে দুই ভাগ করেছিলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও তেমনই এমন এক সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেবেন, যাতে বাংলাদেশ আর ভারতবিরোধী বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত না হয়।’
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হলে রাহুল গান্ধীর ভূমিকা কী হবে—এই প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বলেন, ‘রাহুল গান্ধীও কাজ করবেন। তারা আলাদা নন। রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা একই মুখের দুটি চোখ; ইন্দিরা গান্ধীর নাতি। তাদের আলাদা করে দেখবেন না; তারা দুটি চোখ, কিন্তু দৃষ্টি একটাই।’
মাসুদের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দাবি করেছে, কংগ্রেসের ভেতরেই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে আস্থা ভেঙে পড়ছে। দলটির মতে, রাহুল গান্ধীর ‘জনমত নেই, সংগঠন নেই, জনপথের সমর্থনও নেই’।
এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে রাহুল গান্ধীর ওপর তার আর কোনও বিশ্বাস নেই। বার্তাটা পরিষ্কার ‘রাহুল হটাও, প্রিয়াঙ্কা লাও’। এখন তিনি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে কাজ করছেন, এমনকি রবার্ট ভদ্রাও প্রকাশ্যে তা সমর্থন করেছেন। এর মানে রাহুল গান্ধী শুধু জনসমর্থনই হারাননি, তার মিত্ররাও তাকে প্রত্যাখ্যান করছেন। এখন জনপথেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাহুল গান্ধীর ‘জনমত’ নেই, ‘সংগঠন’ নেই, এমনকি ‘জনসমর্থন’ও নেই।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে এমন সময় কংগ্রেস সাংসদ মুখ খুললেন যখন দেশটিরে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশন আক্রান্ত হওয়ার আগমুহূর্তে। এমনকি উগ্র-হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণাত্মক বিক্ষোভের মুখে বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটির কার্যক্রম। কূটনৈতিকপাড়াও বিরাজ করছে অস্বস্তি।
এ নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জনমনে তীব্র ভারতবিরোধী ক্ষোভ জমা হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভারতীয় সাংসদের কংগ্রেস ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ইস্যুতে কি অবস্থান হবে-তা নিয়ে খোল্লাম খোল্লা আলোচনা সন্দেহের চোখে দেখছেন অনেকেই। একইসঙ্গে ঢাকার প্রতি দিল্লির ‘বন্ধুত্ব’ নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কেউ কেউ।