ভাঙা সম্পর্ক, না বলা কথা, আর মনে রয়ে যাওয়া অতীত এসবই ফিরে এসেছে কবিতার ছায়ায়।
প্রকাশিত : ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩:৪২:৩০
“ভাঙা সম্পর্ক থেকে যায়, মনে নয় - ছবির মতো আটকে যায় শব্দের ভাঁজে।” কবি সাবিহা মেহজাবীন
যখন কবিতা হয়ে ওঠে মানসিক থেরাপি
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রাশেদা পারভীন বলেন, “যারা মনের কষ্ট প্রকাশ করতে পারেন না, তাঁদের জন্য লেখা বা কবিতা অনেক সময় এক ধরনের মানসিক মুক্তি দেয়। এই বইটি সেই আত্মকথার জায়গা তৈরি করেছে।” এমনকি অনেক পাঠকই কবিতাগুলোকে নিজের জীবনের অংশ বলে মনে করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লিখেছেন, “এটা যেন আমারই লেখা, শুধু কলম ধরিনি আমি!”
একান্ত অনুভবের শব্দচিত্র
সাবিহার কবিতাগুলোতে নেই অতিরঞ্জন, নেই শব্দের বাহুল্য। আছে নিঃশব্দের আর্তনাদ। যেমন একটি কবিতায় তিনি লিখেছেন:
"তুমি চলে গেলে-
কিন্তু ফেলে গেলে একটা চাবি,
যা দিয়ে প্রতিদিন খুলে দেই কান্নার দরজা।"
এই ধরনের সহজ অথচ গভীর পংক্তিগুলো পাঠক হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে যাচ্ছে।
বিশ্বসাহিত্যে অনুচ্চারিত প্রেম
কবিতায় না-বলা ভালোবাসার এই ধারা নতুন নয়। পাবলো নেরুদা, সিলভিয়া প্লাথ থেকে রুমির লেখায়ও মেলে সেই ব্যথার সুর। সাবিহা এই আন্তর্জাতিক সাহিত্যপ্রবাহের ধারায় নিজেকে খুবই সংবেদনশীলভাবে মেলে ধরেছেন।
পাঠকের চোখে এই কবিতা
৩০-৭০ বছর বয়সী অনেক পাঠক এই বইয়ের সাথে নিজেদের জীবন খুঁজে পাচ্ছেন। বিশেষ করে একাকিত্ব, হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক, মধ্যবয়সের মানসিক টানাপড়েন এসব বিষয় যেন অনুচ্চারিতভাবে উঠে এসেছে প্রতিটি কবিতায়।
পরিশেষে
ভালোবাসা যেমন প্রকাশের অপেক্ষায় থাকে, তেমনি থাকে না বলা আবেগের স্তর। ‘তোমাকে না বলার শব্দ’ সেই স্তরের ভাষ্য, যেখানে শব্দ নয়, নীরবতাই হয়ে ওঠে ব্যথার কাব্য। এই বইটি শুধু কবিতার বই নয় এ এক নীরব আত্মজিজ্ঞাসা, এক অপরূপ স্মৃতিচিহ্ন। ভুলতে না পারা সেইসব অনুভূতিরা এখানে এসেছে ছন্দে, ছায়ায়, আর কল্পনার ঘোরে।