গ্লোবাল সাহিত্য আসরে এখন ঘুরছে বাংলা কবিতার প্রতিধ্বনি। নোবেল নয়
প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৫, ৩:১৫:৩২
গ্লোবাল সাহিত্য আসরে এখন ঘুরছে বাংলা কবিতার প্রতিধ্বনি। নোবেল নয়, শব্দের জোরেই জয় করছেন পাঠকের হৃদয়। কে এই কবি, যাঁর ছন্দে বাঁধা পড়ছে বিশ্ববেদনা? “সাহিত্যে নোবেল না পাওয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়, অনেক সময় শব্দই হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় পুরস্কার।” প্রফেসর মার্টিন বোল্টন, ইউনিভার্সিটি অফ ওকলাহোমা, সাহিত্য সমালোচক
তাঁর নাম হয়তো গুগলে সার্চ দিলে প্রথম পাতায় আসবে না। কিন্তু ইউরোপের সাহিত্য সাময়িকীতে, আফ্রিকার spoken poetry মঞ্চে কিংবা ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্য উৎসবে উচ্চারিত হচ্ছে যে ক’টি নাম তাঁর নাম তার মধ্যে অন্যতম। কবি অরিন্দম সাহা, একান্তই বাংলার সন্তান, কিন্তু তাঁর কবিতার প্রসার এখন আর দেশের গণ্ডিতে আটকে নেই। প্রবাসী এই কবি এখন যুক্তরাজ্যে থাকেন, পেশায় অধ্যাপক। কিন্তু হৃদয়ে লালন করেন বাংলাদেশের মাটি, মানুষের ব্যথা ও বিবর্ণ আশার গল্প। সম্প্রতি তাঁর কাব্যগ্রন্থ “Silent Saffron” পেয়েছে ইউরোপিয়ান লিটারারি ফোরামের ‘রাইটার্স ইন রেজোন্যান্স’ পুরস্কার। সেখানে বিচারকরা বলেছেন, “এই কবিতা একধরনের বৈশ্বিক কান্না যেটা বাংলায় বলা হলেও পৃথিবীর সব মাতৃভাষায় অনূদিত হতে পারে।”
কেন এত জনপ্রিয়তা?
অরিন্দম সাহার কবিতায় রাজনৈতিক রাগ নেই, কিন্তু আছে অস্পষ্ট এক শোক। একটি পঙ্ক্তি “যেখানে শিশুরা শিখে না কাঁদতে, সেখানেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি পড়ে” এই ধরনের বাক্য গেঁথে যায় পাঠকের মনে। তাঁর লেখায় বাংলার গ্রামীণ গন্ধ যেমন থাকে, তেমনি থাকে সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপের আর্তনাদ। ভাষা ও ভাবনার এমন মেলবন্ধন তাঁকে করে তুলেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভীষণ প্রাসঙ্গিক।
বিশেষজ্ঞ মত:
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কবি সমালোচক ড. সোমনাথ লাহিড়ী বলেন, “এই সময়ের বাংলা কবিতায় যাঁরা সত্যিকারের সাহস দেখিয়েছেন, অরিন্দম তাঁদের একজন। তিনি নোবেল পাননি, ঠিকই, কিন্তু ভবিষ্যতের পাঠ্যপুস্তকে তাঁর নাম থাকবেই।”
বিশ্বমঞ্চে তাঁর চিহ্ন:
- প্যারিস লিটারারি সামিটে তাঁর কবিতা ছিল উদ্বোধনী পাঠে।
- পেন ইন্টারন্যাশনাল-এ বিশেষ আমন্ত্রিত কবি হিসেবে বাংলায় পাঠ করেছেন।
- আফ্রিকার "Poetry Against Silence" মঞ্চে একমাত্র এশিয়ান প্রতিনিধি ছিলেন তিনিই।