প্রকাশিত :
২১ জুন ২০২৫, ৮:৪৮:২২
টিকটক, ইনস্টাগ্রাম রিল, ফেসবুক ও ইউটিউব এই চার প্ল্যাটফর্মেই ঘুরছে একটি পরিচিত কার্টুন ফেস। ছোট্ট মুখ, সরল আঁকা লাইন, ব্যঙ্গাত্মক কথা আর মধ্যবিত্ত জীবনের বাস্তবতা এটাই সামিমা শ্রাবণীর “স্যাডলি ফানি” অ্যানিমেশন সিরিজের স্বাক্ষর।
মাত্র ২০ বছর বয়সেই অ্যানিমেশন জগতে সামিমা শ্রাবণী তৈরি করেছেন নিজস্ব একটি জায়গা। বাংলাদেশি সমাজে যে বিষয়গুলো সাধারণত “লুকিয়ে রাখা হয়” বা “বলা বারণ”—সেসব নিয়েই তিনি তৈরি করছেন হাস্যরসাত্মক অথচ চিন্তাশীল কনটেন্ট।
একটি উদাহরণ:
তার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মেয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে, হঠাৎ একজন পথচারী বলে বসে, “এইটা কি পোশাক হইলো?” পরক্ষণেই চরিত্রটি হেঁসে বলে, “ভাই, আমার শরীর, আপনার সমস্যা?” ভিডিওটি মাত্র ৩ দিনে ৪.২ মিলিয়ন ভিউ পায়। কমেন্ট বক্সে ঝড় ওঠে।
কেন এই জনপ্রিয়তা?
১. অ্যানিমেশনের ভাষা সহজ, কিন্তু বার্তা জটিল
২. হাসির মোড়কে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা
৩. ‘Relatable’বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে
সামিমা কী বলছেন?
তিনি বলেন, “আমি কাউকে ছোট করার জন্য ভিডিও বানাই না। কিন্তু যারা বড় হয়ে সমাজ চালায়, তাদের কাজের ফাঁকগুলো দেখানোও দরকার। অ্যানিমেশন একটা শক্তিশালী অস্ত্র।” সামিমা শ্রাবণী বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত একটি ডিজাইন স্টুডিওতে কাজ করছেন। পাশাপাশি নিজের ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলে নিয়মিত কনটেন্ট প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই শুরু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজ্যুয়াল স্টাডিজ বিভাগে পড়ার সময় তিনি নিজের ফোন দিয়েই অ্যানিমেশন তৈরি করা শুরু করেন। এখন তিনি মোবাইল থেকে পেশাদার সফটওয়্যার Adobe Animate, Toon Boom ব্যবহার করছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন:
-
“এটা নিছক বিনোদন না। এটা একটা সামাজিক প্রতিবাদ।” অধ্যাপক তানভীর হাসান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
-
“তার কাজগুলো বাংলাদেশের তরুণদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি শেখাচ্ছে।” জার্মান DW Culture
এই অ্যানিমেশন কি বদলে দিতে পারে কিছু?
সম্ভবত হ্যাঁ। সামিমার কনটেন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন NGO ও নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো আগ্রহ দেখিয়েছে। তার ভিডিওগুলো এখন সমাজের অবচেতন মানসিকতায় ধাক্কা দিচ্ছে—নিরব প্রতিবাদের ভাষায়।