প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৫:৪০
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন মো. সুমন (৪৫) নামের এক যুবলীগ নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে দড়ি সোনাকান্দা মোড়ে পুলিশের পাহারায় স্ত্রীর জানাজার নামাজে অংশ নেন সুমন।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিস্ফোরকের মামলায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে সুমনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় সুমনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি সন্তান প্রসব করেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে নবজাতক এবং একই দিন রাত ৮টায় তার স্ত্রী হাফেজা বেগমের মৃত্যু হয়।
সুমনের বড় ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, তার ভাই সুমন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা ইউনিয়ন (বিলুপ্ত) শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে কোনো কমিটিতে পদ না থাকলেও যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সুমন গ্রেপ্তার হবার পর টানা দুʼদিন থানা ও আদালত ছুটে বেরিয়েছেন তার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগম। চলতি মাসের শেষ দিকে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ থাকলেও শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জানাজার নামাজের আগে স্ত্রী ও সন্তানের বিদেহী আত্মার জন্য সবার দোয়া প্রার্থনা করেন সুমন। স্বজনরা তাকে মৃত নবজাতকের ছবিও দেখিয়েছেন মোবাইল ফোনে, তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
স্থানীয়রা বলেন, সুমন বন্দরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা খান মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। খান মাসুদের প্রভাবে সুমন এলাকার ব্রডব্যান্ড সংযোগের ব্যবসারও একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, পুলিশি প্রহরায় সুমনকে জানাজার নামাজের জন্য নেওয়া হয় এবং কার্যক্রম শেষে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।