আপডেট :
০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:৫৭:১৮
নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও পিরোজপুরের কয়েকটি উপজেলায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনুগত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এখনো মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
তাদেরই একজন ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বামী রাশেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
গত বছর গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে রেহেনা আক্তার ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের এসিল্যান্ড। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা ও শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের সুপারিশে ২০২২ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরের এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রেহেনা।
সেখানে চাকুরিতে যোগদানের পরেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। একই সঙ্গে সালমান এফ রহমানের বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ সুবিধাও দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সে সময় এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, বিপুল অংকের অর্থের বিনিময়ে একজনের জমি আরেকজনের নামে নাম জারিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর কিছুদিন পর পদোন্নতি বাগিয়ে তিনি হয়ে যান ইউএনও।
অভিযোগ রয়েছে, রেহেনা যখন শ্রীপুর, গাজীপুরের এসিল্যান্ড ছিলেন তখন অফিসে রাত ১২টার দিকে টাকা ভাগাভাগির সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কর্তৃক আকস্মিক পরিদর্শনে হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে তাকে এসিল্যান্ড থেকে প্রত্যাহারও করা হয়।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর বর্তমানে ভান্ডারিয়ার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরুর পর থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, আর্থিক তছরুপ ও দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন। এমনকি জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে তালা মারা, প্রশাসনের কাছে আর্থিক তছরুপসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ভান্ডারিয়া পৌরসভার মেয়রের অনুপস্থিতিতে রেহেনা আক্তার প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঠিকাদারদের বিল প্রদানে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান না থাকায়, একক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় পরিষদের এডিপি ও রাজস্ব তহবিল তছরুপ ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে রেহেনার বিরুদ্ধে।
এমন অবস্থায় বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের স্ত্রী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলে তারা সুষ্ঠুভাবে ভোট করতে পারবে কী-না সেটি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার বলেন, দিনরাত পরিশ্রম করে এসব মিথ্যা অভিযোগ শুনতে বিরক্ত লাগে। দিনরাত কাজ করে দম ফেলার সুযোগ পাই না আর আপনারা এসব লেখার সময় পান কিভাবে।