শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, নরসিংদী জেলার সদর থানা এলাকার একটি বিলে পানির ভেতর থেকে ওই অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, অভিযানকালে ওই স্থান থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ১টি খেলনা পিস্তল এবং ৪১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. ফয়সাল (২৫) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি হাদিকে গুলির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা ও মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ ওরফে শিপুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নরসিংদী সদর থানা এলাকার ওই বিলে অভিযান চালানো হয়। ওয়াহিদ আহমেদের বাড়ি, যা ফয়সাল করিম মাসুদের শ্বশুরবাড়ি, নরসিংদী সদর থানা এলাকায় অবস্থিত। এর আগে গত রোববার ফয়সাল করিমের স্ত্রী পারভীন সামিয়া এবং শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালত তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতেই র্যাবের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে ফয়সাল করিমের বোনের বাসা এবং পাশের ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে ২টি ম্যাগাজিন, ১১টি গুলি এবং ১টি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফয়সাল করিমের বোনের বাসার আশপাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে ফয়সাল করিম ও তাঁর সহযোগী আলমগীর একটি মোটরসাইকেলে করে বাসা থেকে বের হন। পরে বিকেল ৪টার দিকে ফয়সাল, আলমগীর এবং ফয়সালের মা ও ভাগিনাকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে কিছু বের করতে দেখা যায়। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে ফয়সাল ও আলমগীর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সেখান থেকে চলে যান।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি একটি রিকশায় করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তির একজন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে শনাক্ত করে। তারা হলেন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান, যিনি প্রধান সন্দেহভাজন শুটার, এবং আলমগীর হোসেন, যিনি মোটরসাইকেল চালক।
এ ঘটনায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালকসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে।