আপডেট :
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৬:০৩
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকা। দেশের বিভিন্ন জেলাতেও শুরু হয় বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভ থেকে আগুন দেওয়া হয় দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) হামলার কারণে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রকাশ হয়নি প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা।
যতটা দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত কারিগরি ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করে অনলাইন ও পত্রিকার প্রকাশ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো। সকালে প্রথম আলোর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই বার্তা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘বিগত রাতে প্রথম আলোর কার্যালয় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হওয়ায় আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই আজ প্রথম আলো ছাপা পত্রিকা প্রকাশ করা যায়নি। অনলাইন পোর্টালও সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। পাঠকদের কাছে এ জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। যতটা দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত কারিগরি ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করে প্রথম আলোর অনলাইন ও পত্রিকার প্রকাশ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পাঠকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।’
আজ সকালে প্রথম আলোর প্রধান ফটকের সামনে ‘ক্রাইম সিন’ লেখা ফিতা টানিয়ে দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই ফিতায় লেখা— ‘ডু নট ক্রস’। পাশাপাশি সিএ ভবনের পাশেও ক্রাইম সিন ঘোষণা করে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা অঞ্চলটিকে ‘ক্রাইম সিন’ ঘোষণা করছি৷ একটু পর আমাদের কেমিক্যাল এক্সপার্ট টিম আসবে৷ ভেতরে আলামত সংগ্রহ করা হবে৷ এই মুহূর্তে শুধুমাত্র ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন।
পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ক্রাইম সিন’ লিখে বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখার অর্থ হচ্ছে, ওই বেষ্টনী পেরিয়ে কেউ কার্যালয়ে কেউ প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না। অপরাধ তদন্তের জন্য সেখান থেকে পুলিশ আলামত সংগ্রহ করছে। পুলিশের তদন্তকাজের এ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যালয় কার্যত বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন ঢাকা-৮ আসনের স্বত্রন্ত্র প্রার্থী এবং রাজনৈতিক আন্দোলন ‘ইনকিলাব মঞ্চে’র মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি।
ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে অন্তর্বতী সরকার। আজ সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে তার মরদেহ।
ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে শুক্রবার সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে শহিদ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করা হবে। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।