প্রকাশিত :
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:১১:২৬
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত তার মরদেহবাহী বিমান ঢাকা অবতরণের পর পরই এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ৪৮মিনিটে ফ্লাইটটি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে সেখান থেকে হাদির মরদেহ হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পথে নেওয়া হয়। এর আগে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
এর আগে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে হিমাগারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। সেখানে শহিদ ওসমান হাদিকে রেখে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে এসে অবস্থান নেবে। পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে আজকের পরিবর্তে আগামীকাল মিছিলসহ ভাইকে সেন্ট্রাল মসজিদে আনা হবে।
সংগঠনটি আরও জানায়, ছাত্র জনতা আজ ও আগামীকাল শৃঙ্খলার সাথে আন্দোলন জারি রাখবেন যেন কোনো গোষ্ঠি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারে একইসঙ্গে সহিংসতা করার সুযোগ ও না পায়। মরদেহ দেখার কোনো সুযোগ থাকবেনা। সকলের নিকট শৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং শহিদ ওসমান হাদীর জন্য দোয়া পৌঁছানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।
তবে আরও আগে ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছিল, বিমানবন্দর থেকে ওসমান হাদির মরদেহ সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হবে। এ সময় জুলাই আন্দোলনের প্রাণ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মোৎসর্গকারী অকুতোভয় এই বীরকে গ্রহণ করতে সবাইকে এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। পরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহিদ ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
ইনকিলাব মঞ্চ আরও জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে মারাত্মক আহত হন ওসমান হাদি। রিকশায় থাকা অবস্থায় তার মাথায় গুলি লাগে। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।