প্রকাশিত :
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:১৩:১২
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) মেটাকে এ চিঠি দেয়। সেই সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ–সংক্রান্ত কনটেন্টগুলোর ওপর বিশেষ নজরদারি জারি রাখতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে সহিংসতা উসকে দিতে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বাস্তব জীবনের সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই রাতেই ঢাকায় প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার ও ছায়ানট ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং সংবাদমাধ্যমে হামলার ঘটনা ফেসবুক ব্যবহার করে সহিংসতা ছড়ানোর ধারাবাহিকতার অংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ফেসবুকে প্রকাশ্যে ওসমান হাদির মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যরা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব বক্তব্য ছড়ানোর পরপর প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি হয়।
সরকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হলেও সহিংসতা উসকে দেওয়া অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে মেটা সহযোগিতা করেনি বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
ফেসবুকের মাধ্যমে উসকে দেওয়া সহিংসতার সঙ্গে নাগরিকদের জীবন, গণতান্ত্রিক অধিকার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা গভীরভাবে যুক্ত। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় কয়েকটি বিষয়ে মেটাকে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে। সেসবের মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ–সংক্রান্ত আধেয়র ক্ষেত্রে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রেক্ষাপট সংবেদনশীলভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষাভিত্তিক আধেয় মডারেশন করা, অনুভূতি বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা জোরদার করা এবং সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সংগঠিত ক্ষতির আহ্বান জানানো আধেয়র বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।