তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ‘শুরু হয়ে গেছে’, মন্তব্য রুশ জেনারেলের
প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০২৫, ১১:৪০:৫২
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনে আঘাত হেনে ইরান কিছু সময়ের মধ্যে ১০০–১৫০টি ব্যালিস্টিক রকেট ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের দিকে। সরকারি সূত্রে জানা যায়, টেল আভিব, রিশোন লেজিওন ও রামাত গানের মতো শহরে হামলার পরিণামে ৪ জন নিহত ও অন্তত ৬৩ জন আহত হয়েছে
ইসরায়েল বৃহস্পতিবার “Operation Rising Lion” নামে ইরানের ন্যাটান্জ ও ফোর্ডো পারমাণবিক কেন্দ্র, মিলিটারি ইনস্টলেশন এবং আইআরজিসি–র সিনিয়র কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে ৭৮ জন ইরানী মৃত্যু ও ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয় । এরপরেই শুক্রবার ইরান প্রতিশোধে হামলা চালায়।
ইরান প্রথম দফায় ঐ সময়ে ১০০–১১৫ টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠায়, তার কিছুটা সরাসরি আঘাত হানে; ইহুদিবাদী শহরগুলোতে শ্ল্যাগমেন্টেশন ও বিস্ফোরণের ভেতর প্রাণহানির খবর আসে
আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির আওয়াজ
জাতিসংঘ সাধারণ সম্পাদক আন্তোনিও গুতের্স “সর্বোচ্চ সতর্কতা ও ধৈর্যের মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে” আহ্বান জানিয়েছেন ।
IAEA (আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা)‑র পরিচালক ডঃ রাফায়েল গ্রোসি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পারমাণবিক স্থলগুলো নিরাপদ থাকবে না; এক্ষেত্রে জরুরি বৈঠক আহ্বান জানিয়েছেন ।
অর্থনৈতিক ও বাজার প্রতিক্রিয়া
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার কারণে তেলের দাম ১০ % পর্যন্ত ওঠা নামা করেছে । নিরাপত্তার কারণে উড়োজাহাজ বাতিল বা ভ্রমণ সংকট: উল্লেখযোগ্য ফ্লাইটে ব্যাঘাত দেখা গেছে । মধ্যপ্রাচ্য আজ আবারও যুদ্ধের ভয়াবহ দ্বারপ্রান্তে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ৪ জন নিহত ও ৬৩ জন আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা এবার কেবল কথার লড়াই নয়—সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাবে ইরান যে প্রতিশোধ নিয়েছে, তা শুধু একটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়—বরং বহুদিনের জমে থাকা রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আঞ্চলিক বিরোধের বিস্ফোরণ। এই হামলার মাধ্যমে ইরান বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা আর প্রতিরক্ষায় থেমে থাকবে না—প্রয়োজনে আক্রমণ করবে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপদজনক বিষয় হলো, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চেষ্টাগুলোর ধীরগতি ও ব্যর্থতা। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া সবাই শান্তি চাইলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনও দৃশ্যমান নয়। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে এই উত্তেজনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে—বিশেষত জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীদের নিরাপত্তা, ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সম্ভাব্য ব্যাঘাতের কারণে।
সবশেষে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কেবল দুই দেশের নয়—এটি গোটা বিশ্বের জন্য এক জটিল সংকেত। এখনই সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জেগে ওঠার এবং শক্তিশালী শান্তি-প্রক্রিয়া শুরু করার, নয়তো এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে আরও বহু সীমান্তে, বহু প্রাণের বিনিময়ে।