অবরোধে ধুঁকছে গাজা, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে; জাতিসংঘ ও ডব্লিউএইচও’র গভীর উদ্বেগ
প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১:২১:৪১
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্লাড ব্যাংকগুলোতে রক্তের সংকট চরমে। অনেক মানুষ রক্ত দিতে আসলেও অপুষ্টির কারণে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আল-শিফা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের প্রধান আমানি আবু ওউদা বলেন, “রক্তদাতারা দুর্বল হয়ে পড়ছেন, ফলে রক্ত নেওয়া যাচ্ছে না। রক্ত নেওয়ার পরপরই অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন।”
অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধায় মারা গেছেন অন্তত ৫ জন এবং হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪৪ জন, যাদের ১৮ জন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, গত দুই দিনে মাত্র ৩ লাখ লিটার জ্বালানি প্রবেশ করতে পেরেছে গাজায়, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। এতে শতাধিক নবজাতকের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মহাপরিচালক টেড্রোস গ্যাব্রিয়াসিস জানিয়েছেন, এখনও ১৪,৮০০ রোগীর জরুরি চিকিৎসা দরকার, অথচ ১০০ জনের বেশি চিকিৎসক ও সার্জনকে গাজায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফ সম্পর্কে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মানবিক সাহায্যের আড়ালে সামরিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ১,৫৬০ জন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন শুধুমাত্র ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে।
জাতিসংঘ ও ইউএন স্যাটেলাইট সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, গাজার মাত্র ৮.৬% চাষযোগ্য জমি প্রবেশযোগ্য, যার মধ্যে মাত্র ১.৫% জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এর ফলে গাজার নিজস্ব খাদ্য উৎপাদন কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে হামাস বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রসহ দখলদারদের দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন ঘোষণা দিতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।