আপডেট :
১১ অক্টোবর ২০২৫, ২:৩৬:২৭
উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) প্রদর্শন করে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। শুক্রবার রাতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে বিভিন্ন দেশের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ’র বরাত দিয়ে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কুচকাওয়াজটি আয়োজন করা হয় কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টি ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদযাপনের পর এটি ছিল মূল অনুষ্ঠান। বিদেশি অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তো লাম।
অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়া প্রদর্শন করে তাদের উন্নত ‘হোয়াসং-২০’ আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে দেশটির ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে কেসিএনএ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হোয়াসং’ সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানার সক্ষমতা রাখলেও বিশেষজ্ঞরা এখনো এর নির্ভুলতা কিংবা বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের পর ওয়ারহেড টিকে থাকার ক্ষমতা নিয়ে নিশ্চিত নন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলেন, ‘হোয়াসং-২০ আপাতত উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘপাল্লার পারমাণবিক সক্ষমতার অনন্য মাইলফলক। বছরের শেষ নাগাদ এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সিস্টেমটি সম্ভবত একাধিক ওয়ারহেড বহনের জন্য নকশা করা হয়েছে। একাধিক ওয়ারহেড যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে এবং কিমের দৃষ্টিতে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।’
কুচকাওয়াজে দেওয়া ভাষণে কিম জং উন বিদেশে দায়িত্বরত উত্তর কোরীয় সেনাদের, বিশেষ করে রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োজিত সৈন্যদের প্রতি ‘উষ্ণ অভিনন্দন’ জানান। তিনি বলেন, তাদের বীরত্ব কেবল জাতীয় প্রতিরক্ষায় নয়, বরং ‘সমাজতান্ত্রিক নির্মাণের অগ্রভাগেও’ ভূমিকা রাখছে।
কিম ঘোষণা দেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীকে এমন এক শক্তিতে পরিণত হতে হবে, যা সব ধরনের হুমকি মোকাবেলা করতে সক্ষম।’
শুক্রবার কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত উত্তর কোরিয়ার সেনারা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার প্রতীক।’ এ সময় কিম জং উন রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার এবং পারস্পরিক লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।