প্রকাশিত :
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:২১:২০
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের বিক্ষোভে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। কলকাতার সমালোচিত সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষও এ সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে জানা গেছে। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন তিনি।
রক্তাক্ত শার্ট পরিহিত ছবি দিয়ে ময়ূখ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য প্রতিবাদ করতে এসে, কলকাতায় লাঠির বাড়ি খাওয়া সনাতনীদের রক্ত লেগে আমার জামায়। নাক-মুখ ফাটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একা ছিল না। সব্বাই জাপটে ধরেছে। এভাবেই জামাটা থাকবে। এই দাগ লাগা জামাটা অনেককিছু বদলে দেবে মিলিয়ে নেবেন। সবকিছু মনে রাখা হবে। সব কিছু।’
ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা ও তার মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদে এ সমাবেশ ডাকা হয়েছিল। বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় এই সমাবেশ শুরু হয়।
কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিচার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিল।
বিবিসি জানিয়েছেন, ডেপুটি হাই কমিশনের প্রায় ২০০ মিটার দূর পর্যন্ত মোট তিনটি ব্যারিকেড দিয়েছিল পুলিশ। সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে, এক পর্যায়ে প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে বিক্ষোভকারীরা।
এরপর দ্বিতীয় ব্যারিকেড পর্যন্ত তারা পৌঁছে যাওয়ার পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। দূতাবাসের অন্তত ১০০ মিটার দূরে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় পুলিশ।
অন্যদিকে দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করে উগ্র-হিন্দুত্ববাদীরা। এ সময় তারা পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে হাইকমিশন অভিমুখে মারমুখি যাত্রা করে। তবে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশনে প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য সরকারি বেশ কিছু বাস ‘বাধা হিসেবে’ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিশাল এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ১৫ হাজার পুলিশ সদস্যের ‘শক্তিশালী ফোর্স’ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশ হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করলেও, বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীরা কমপক্ষে দুটি স্তরের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড ধরে দূতাবাসে স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।