জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।
প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৩:০৬
বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন শনিবার তৃতীয় দিনে গড়ালো। শুক্রবার ভোট গণনার দ্বিতীয় দিনেই পরিস্থিতি রূপ নেয় বিশৃঙ্খলা, ক্ষোভ ও শোকে। প্রার্থীরা দ্রুত ফলাফল ঘোষণা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিন নির্বাচন ঘিরে শোকাবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়, যখন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জন্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা গণনা তদারকির সময় অসুস্থ হয়ে মারা যান। বৃহস্পতিবার তিনি প্রীতিলতা হলে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। শুক্রবার সকালে সিনেট ভবনে প্রবেশের সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলের রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক সুলতানা আখতার অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনাই এ মৃত্যুর জন্য দায়ী। তার মতে, মেশিন বাদ দিয়ে হাতে গণনার সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব সৃষ্টি করেছে, যা কর্মকর্তাদের চরম চাপের মুখে ফেলেছে।
এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, জন্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয় ও চারুকলা বিভাগের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
ভোট গণনায় বিলম্ব নিয়ে ছাত্রনেতা ও শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হলেও ৩২ ঘণ্টা পরও গণনা শেষ হয়নি। কমিশন জানিয়েছে, প্রার্থীদের আপত্তির কারণে ওএমআর মেশিন বাদ দিয়ে হাতে গণনা শুরু করায় এ বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে তিনটি প্রার্থী প্যানেল রাতের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, ২১টি আবাসিক হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের ১০টি হলে ৫৯টি পদে কোনো প্রার্থী ছিল না, ৬৭টিতে একক প্রার্থী থাকায় শুধু ২৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। তবে জাকসুর ২৫টি পদের গণনা এখনও চলছে।
এবারের নির্বাচনে ১১,৭৪৩ নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬,১০২ এবং নারী ভোটার ৫,৮১৭ জন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা বলবৎ রয়েছে। প্রায় ১,৫০০ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির ১০টি প্লাটুন মোতায়েন আছে।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম রশিদুল আলম জানিয়েছেন, অন্তত ২৫ হাজার ব্যালট গণনার কাজ চলছে। আজ রাতেই কেন্দ্রীয় ফলাফল ঘোষণা করার চেষ্টা চলছে, তবে শনিবার সকাল পর্যন্তও গড়াতে পারে।