আপডেট :
২১ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৬:২৬
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জোড়ালো ভূমিকম্প হয়েছে আজ। যার কম্পনে এখনো কাঁপছে গোটা দেশ। এর মধ্যেই ভয়াবহ শঙ্কার কথা জানালেন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।
তিনি বলেন, এবারের ভূমিকম্পের থেকে সামনে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে নাগরিক প্রতিদিনকে মুঠোফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ শঙ্কার কথা বলেন।
ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, আজকের ভূমিকম্প অনেক ভয়াবহ ছিল। মূলত দুটি প্লেটের সংযোগস্থলে ঘটনাটি ঘটে। প্লেট দুটি আটকে ছিল। আজকের কম্পনের ফলে প্লেট দুটি খুলে গেছে। এতে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। যেকোনো সময় আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে।
সাধারণ মানুষের জন্য কোনো বার্তা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি। যে অবকাঠামোতে আমরা বসবাস করি, সেখানে পরিবর্তন আনা সম্ভব না। এর মধ্যেই আমাদের বসবাস করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের কৌশল জানতে হবে। তাড়াহুড়ো না করে কীভাবে নিরাপদ জায়গায় যেতে হবে। যাতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য আমাদের মহড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। যা ব্যবহার করে আমরা ভূমিকম্পের সময় ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নির্ধারণ করতে পারি। একই সঙ্গে নিরাপদ জায়গার কথা যদি সহজে বলা যায় মানুষদের তাহলে হয়তো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমে যাবে।
এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, সরকারের কাছে এটার কোনো গুরুত্ব নেই। জনসচেতনতা বাড়াতে সরকারকে অনেকবার বলা হয়েছে কিন্তু সরকার আগ্রহী না। কারণ জনসচেতনতা বাড়াতে টাকা খরচ হবে, তারা সেটা চায় না। সরকার আগ্রহী ব্যবসা নিয়ে। যেখানে টাকা আসবে, বেশি টাকার লেনদেন হবে সেই সব খাত ছাড়া তারা আগ্রহ দেখায় না।
আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়াও সারাদেশে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এর কেন্দ্রস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। ঢাকার অদূরে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় এর প্রভাব বেশি অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
স্থাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, হতাহতদের চিকিৎসায় দেশের সব হাসপাতালে জরুরি মেডিকেল টিম কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি সরাসরি মনিটর করছে।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস থেকেও বিভিন্ন স্থানে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানানো হয়েছে। তাদের মতেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিল্ডিং হেলে পড়াসহ ফাঁটল ধারার মতো ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন।
এসবের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের কারণে বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন বিঘ্নিত হয়েছে এবং দেশের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।