আপডেট :
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৩৮:৩৪
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে নরসিংদীতে পাঁচজন, ঢাকায় চারজন এবং নারায়ণগঞ্জে একজনসহ প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১০ জন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। এর আগে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
নরসিংদী
নরসিংদীতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দেলোয়ার হোসেন (৩৭), তার ছেলে ওমর ফারুক (৮), কাজম আলী ভূইয়া (৭০), নাসির উদ্দিন (৫০) ও ফুরকান মিয়া (৪২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ভূমিকম্পে সদর উপজেলার গাবতলী এলাকার একটি নির্মাণাধীন সাত তলা ভবনের ছাদ থেকে ইট পড়ে দেলোয়ার হোসেন, তার ছেলে ওমর ফারুক ও অজ্ঞাত আরেকজন আহত হন। গুরুতর আহত ওমর ফারুক ও দেলোয়ার হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়।
এছাড়া পলাশ উপজেলার মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়ে মালিতা গ্রামের কাজম আলী ভূইয়ার মৃত্যু হয়। পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন ও শিবপুর উপজেলার আজকিতলা গ্রামের ফুরকান মিয়া ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে প্রথমে নরসিংদীর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হলে পথেই মৃত্যু হয় তার।
শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফারজানা ইয়াছমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নরসিংদীর সদর হাসপাতাল ও নরসিংদী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালেল জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত দেড়শতাধিক মানুষ আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ৫৭ জন এবং নরসিংদী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে জেলার প্রায় সব উপজেলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঢাকা
ঢাকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চার জন হয়েছে। ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিমের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্যে মুগদা মদিনাবাগে নির্মাণাধীন ভবনের রেলিং ধসে পড়ে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মাকসুদ (৫০) নিহত হয়েছেন। তিনি লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার বাসিন্দা।
এর আগে পুলিশ জানায়, ভূমিকম্পের সময় পুরান ঢাকার আরমানিটোলার কসাইটুলি এলাকার একটি আটতলা ভবনের পাশের দেয়াল এবং কার্নিশ থেকে ইট ও পলেস্তরা নিচে খসে পড়ে।
এসময় ভবনের নিচে থাকা একটি গরুর মাংসের দোকানে থাকা ক্রেতা ও পথচারীরা আহত হন। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় লোকজন তাদের মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ
জেলার রূপগঞ্জে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় একটি টিনশেড বাড়ির দেয়াল ধসে পড়ে ফাতেমা নামে এক বছর বয়সি শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম আহত হন। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফাতেমা গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ইসলামবাগ এলাকার আব্দুল হকের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পের সময় গোলাকান্দাইল ইসলামবাগ এলাকার কুলসুম বেগম তার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে হেঁটে ভুলতা গাউছিয়া এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাস্তার পাশে একটি টিনসেড বাড়ির দেয়াল ধসে নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ফাতেমা। আহত হন তার মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে ফাতেমা নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় শিশুটি মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম গুরুতর আহত হয়েছেন।