প্রকাশিত :
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩:১৬:৪২
বাংলা ভাষার ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় নতুন মাইলফলক স্থাপন করে চালু হলো বাংলা ভাষার প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘কাগজ ডট এআই (kagoj.ai)’। একই সঙ্গে উন্মোচন করা হয়েছে নতুন বাংলা ফন্ট ‘জুলাই’, যা দাপ্তরিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে এ দুটি প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, গত দুই সপ্তাহে প্রায় চার হাজার মানুষ পরীক্ষামূলকভাবে ‘কাগজ ডট এআই’ ব্যবহার করেছেন এবং সন্তোষজনক ফল পেয়েছেন। বাংলা ভাষাকে সবার জন্য আরও সহজলভ্য করতে খুব শিগগিরই এই প্ল্যাটফর্মের এপিআই উন্মুক্ত করা হবে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এর সোর্স কোডও উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভাষার স্থানীয় সাংস্কৃতিক ধারা সংরক্ষণের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি নৃগোষ্ঠীর ভাষা থেকে ১০ হাজার মিনিটের ওরাল ডেটা সংগ্রহ করা হবে। এসব তথ্য ব্যবহার করে তৈরি করা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলা লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)। ডেভেলপার ও ব্যবহারকারীদের এই ইকোসিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে বাংলা ও অন্যান্য স্থানীয় ভাষাকে সাইবার স্পেসে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বর্তমানে যে এআই টুলগুলো নিয়ে কাজ চলছে, সেগুলোর এপিআই ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্টরা আবেদন করতে পারবেন। ব্যবহারকারী সংখ্যা যত বাড়বে, তত বেশি সমস্যা শনাক্ত করা সম্ভব হবে, যা উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুততর করবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘কাগজ ডট এআই’ মূলত বাংলা ভাষাভিত্তিক লেখালেখি, দাপ্তরিক নথি প্রস্তুত, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ এবং কনটেন্ট তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করবে। বাংলা ভাষার জন্য এর আগে এ ধরনের কোনো পূর্ণাঙ্গ এআই প্ল্যাটফর্ম চালু হয়নি।
অন্যদিকে নতুন বাংলা ফন্ট ‘জুলাই’ কম্পিউটার নির্ভর বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা দূর করতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে দাপ্তরিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারে এটি একটি মানসম্মত ও ব্যবহারবান্ধব ফন্ট হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, উদ্বোধন হওয়া এই দুটি সেবা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।