প্রকাশিত :
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৪০:১৭
নয়াদিল্লি থেকে পাঠানো প্রেস নোটকে বাংলাদেশ ‘সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান’ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা জানান, ভারতের দাবি অনুযায়ী নয়াদিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা হয়নি। বরং ২০-২৫ জন যুবক ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাসের হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছে। তবে ভারতের প্রেস নোটে এ বিষয়টি ‘সহজভাবে উপস্থাপন করা’ হয়েছে, যা বাংলাদেশ পুরোপুরি গ্রহণ করছে না।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘হিন্দু চরমপন্থী মাত্র ২০-২৫ জনের দল কূটনৈতিক এলাকায় এত গভীরে প্রবেশ করতে পারবে কেন? এটা স্পষ্টভাবে কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। একজন বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা কেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা আমাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশ এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দূতাবাসের ভেতরে থাকা কর্মকর্তারা নিরাপত্তা শঙ্কা অনুভব করেছেন, যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। আমরা পরিস্থিতি খারাপ হলে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সীমিত করার পদক্ষেপ নিতে পারি।’
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বিক্ষোভের কয়েক মিনিটের মধ্যে স্লোগান দেওয়া যুবকদের সরিয়ে দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ এবং ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী বিদেশি দূতাবাসের নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি জানান, শনিবার প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন তরুণ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়ে ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দেন এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি তোলেন। তবে কোনো সময়ই হাইকমিশনের নিরাপত্তা বেষ্টনি ভাঙার চেষ্টা বা নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
ভারতের সরকারি মুখপাত্র বলেন, ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সংক্রান্ত দৃশ্যমান প্রমাণ জনসমক্ষে উপলব্ধ রয়েছে।
দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাঙ্গণে শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে একদল উগ্র হিন্দু বিক্ষোভ করে। অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনার ব্যানারে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল চার থেকে পাঁচটি গাড়িতে করে সব নিরাপত্তা বেষ্টনি অতিক্রম করে বাংলাদেশ হাউসের মূল ফটকের সামনে উপস্থিত হয়। সেখানে তারা বাংলাদেশবিরোধী নানা স্লোগান দেয় এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে হত্যার হুমকি দেয়।
ঘটনার সময় বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন হাইকমিশনারের উদ্দেশে চিৎকার করে ‘শালাকে গুলি করে মার’ বলে হুমকি দেয়। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, এ ধরনের ঘটনা দিল্লির কূটনৈতিকপাড়ায় নজিরবিহীন।