প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৯:০১:০৭
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য ২০১০ সালে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, সেই একই আদালত এখন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
তবে রায়ের পর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে এসেছে—এ রায় কি আওয়ামী লীগের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে, যে দলটির সভাপতি কিনা এখনো শেখ হাসিনা? আর এর ফলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ থাকলে তা কোন পথে যাবে?
মাসের পর মাস ধরে বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে নির্বাসিত শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগে আদালত অবমাননার একটি মামলায় তাকে তুলনামূলক কম শাস্তিতে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হলেও ভারত সে বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি।
তবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের পর যদি একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসে এবং শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে নতুন করে চাপ সৃষ্টি করে অথবা ভারতের ভেতর থেকে তার দলীয় কার্যক্রম চালানো সীমিত করার চেষ্টা হয়, তাহলে নির্বাচিত সরকারের এমন অনুরোধ উপেক্ষা করা ভারতের জন্য কঠিন হতে পারে।
রায়ের আগেই এক আদেশে আদালত গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, যার বিরুদ্ধে নিন্দা জানায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাহী আদেশে দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে।
সরকার পতনের পর থেকে মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ কার্যত অনুপস্থিত। শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ ভারতে নির্বাসনে, আর অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।
রায়ের পর শেখ হাসিনার বক্তব্য বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে দলটি চরম চাপের মুখে পড়বে।
দলটি বলছে, নেতৃত্ব নিয়ে তাদের ভেতরে কোনো বিতর্ক নেই। তবে ক্রমবর্ধমান আইনি নিষেধাজ্ঞা এবং শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিয়ে ভারতের ওপর কূটনৈতিক চাপ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি দলকে ভিন্ন কৌশল নেওয়ার পথে ঠেলে দিতে পারে কি না, এখন সেটিই দেখার বিষয়।
লেখক
সম্পাদক, বিবিসি নিউজ বাংলা