আপডেট :
২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৮:০৬:৩৩
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা দেখছি গত ১৫ বছর কী হয়েছে, সাংবাদিকরাই উদ্যোগী হয়ে ফ্যাসিজমকে সমর্থন করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের (সাংবাদিকদের) কেউ পকেটে নিতে চায় না। কিন্তু আপনারা যদি পকেটে ঢুকে যান তখন কিন্তু ‘দ্যাট বিকাম অ্যা প্রবলেম’।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটমেন্ট খুব পরিষ্কার। আপনারা দেখেছেন যে আমরা ৩১ দফায় খুব পরিষ্কার করেই বলেছি যে আমরা একটা স্বাধীন গণমাধ্যম দেখতে চাই এবং আমরা সেটাকে তৈরি করতে চাই।’
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘মিডিয়া সংস্কার প্রতিবেদনের পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)। ‘বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন’-এর সহায়তায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘একটা কথা না বলেই পারছি না, আপনাদের (সাংবাদিকদের) তো অনেকগুলো ইউনিয়ন আছে- ডিইউজে, বিএফইউজে। সেগুলোতেও আবার দুটি-তিনটি করে ভাগ আছে। আপনারা নিজেরাই তো দলীয় হয়ে যাচ্ছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে সাংবাদিকদেরও কমিটমেন্টের প্রয়োজন আছে। আপনারা ওই জায়গাগুলো (রাজনৈতিক দলের পকেট) থেকে নিজেরা বাইরে থাকবেন। সাহসী সাংবাদিকতা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন করেছে। কমিশনের রিপোর্ট তৈরি হয়েছে, তবে কোনো আলোচনা হয়নি। পরবর্তীকালে যা-ই হোক, আমরা যদি সরকার পরিচালনার দায়িত্ব জনগণের মাধ্যমে পাই; তাহলে নিঃসন্দেহে এটিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখব।’
অনুষ্ঠানে বিজেসির পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে আমন্ত্রণ পেয়ে বিজেসি ৮ দফা একটি প্রস্তাবনা জমা দেয়। সংগঠনটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে–
১. সম্প্রচার মাধ্যমের জন্য আলাদা আইন প্রণয়ন,
২. একটি স্বাধীন জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন,
৩. টিভি চ্যানেলগুলোকে পে-চ্যানেল ঘোষণা করা ও সম্প্রচারমাধ্যমকে শিল্প ঘোষণা এবং সম্প্রচার সাংবাদিকদের জন্য জবাবদিহিমূলক ‘কোড অব এথিকস’ প্রণয়ন।
এছাড়া টিভি লাইসেন্স নীতিমালা ও মালিকানার ধরন নির্ধারণ, পরিচালনা পর্ষদে কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার মতো কাঠামোগত সংস্কার, স্বাধীন অ্যাক্রেডিটেশন কর্তৃপক্ষ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সাংবাদিকতার নীতিমালার প্রণয়নের দাবি জানানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। রাজনৈতিক দলগুলো এই সুপারিশগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনী ইস্তাহারে তুলে ধরবে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের আহ্বান জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মহাসচিব ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।