প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৭:১২
গাজায় সংঘাত বন্ধে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে এ তথ্য জানান ট্রাম্প নিজেই। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চুক্তিটি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অংশ, যাকে দুই বছর ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে আসন্ন দিনগুলোতে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার কথা রয়েছে।
ট্রাম্প লেখেন, ‘এর মানে হলো খুব শিগগিরই সব বন্দি মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল তাদের নির্ধারিত সীমারেখায় সেনা প্রত্যাহার করবে। এটি হবে মজবুত ও স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ। এতে সব পক্ষের ন্যায্যতা বজায় থাকবে।’
এদিকে, এই সংবাদের পরই ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যেই ২০ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েলি সেনারা গাজার বেশিরভাগ এলাকা থেকে সরে যাবে।
তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার কিছু জটিলও বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ বা গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবুও দুইপক্ষ যুদ্ধ বন্ধে গত কয়েক মাসের তুলনায় সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এছাড়া ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বেশিরভাগ এলাকা।
পাশাপাশি, এই সংঘাতের ফলে বিশ্বজুড়ে ক্রমেই ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে। বন্দি মুক্তির সমাধানের কোনো স্পষ্ট পথ না থাকায় ইসরায়েলেও সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার।
এরইমধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় আমরা সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনব।’ তিনি চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেছেন।
অন্যদিকে হামাস ট্রাম্প ও মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন ইসরায়েল কোনো বিলম্ব না করে চুক্তির শর্ত মেনে চলে। তাদের দাবি, এতে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তবে ট্রাম্পের বিবৃতিতে এখনো পরিষ্কার নয় হামাসের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না। ইসরায়েল এই দাবি বহুদিন ধরে জানিয়ে আসছে, কিন্তু হামাস তা সবসময় প্রত্যাখ্যান করেছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।
ট্রাম্প সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেন, ‘হামাস সম্ভবত সোমবার থেকেই বন্দি মুক্ত করা শুরু করবে। এটা শুধু গাজার ব্যাপার নয়, এটা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির অংশ।’
এই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজার ভেতরে নিজেদের সীমান্ত বরাবর সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে, আর একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রধানত আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সৈন্যদের নিয়ে গাজার নিরাপত্তা দেখভাল করবে। আর একটি বিশাল আন্তর্জাতিক পুনর্গঠন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।