প্রকাশিত :
২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬:৩৯
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা উল্লেখ করে আবারও বলেছেন, যদি নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক শহরে আসেন, তাহলে তিনি আদালতের পরোয়ানার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউইয়র্কের সদ্য সাবেক মেয়র এরিক অ্যাডামস নেতানিয়াহুকে মামদানির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানোর পর মামদানি তার এই অবস্থান জানিয়েছেন। মেয়র নির্বাচনে জয়ের আগেও তিনি একই অবস্থান জানিয়েছিলেন।
এবিসি৭–এর এক লাইভ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ককে ‘আন্তর্জাতিক আইনের শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে মামদানি বলেন, নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান দেখাবে। ওই পরোয়ানায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা এবং যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়।
মামদানি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, আমি বিশ্বাস করি এটি আন্তর্জাতিক আইনের শহর। আর আন্তর্জাতিক আইনের শহর হওয়া মানে আন্তর্জাতিক আইনকে বজায় রাখা। এর অর্থ হলো- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানাগুলোকে সম্মান জানানো, তা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হন বা ভ্লাদিমির পুতিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি বৈশ্বিক শহর, কিন্তু নিউইয়র্কবাসী আমাদের মূল্যবোধ নিয়ে কথা ও কাজে ধারাবাহিকতা দেখতে চান। তাই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই পরোয়ানাগুলো বাস্তবায়নের জন্য আইনি সম্ভাবনাগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে বিবেচনা করা জরুরি।’
নির্বাচনের আগে গত অক্টোবরে ফক্স নিউজের ‘দ্য স্টোরি’ অনুষ্ঠানে মামদানি বলেছিলেন, আইনগতভাবে সম্ভব হলে তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করবেন। তার ভাষায়, নিউইয়র্ক এসব নীতি ধরে রাখতে ও সমুন্নত রাখতে চায়।
মামদানি জানান, তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে নতুন কোনো আইন করার উদ্যোগ নেবেন না।
একই সঙ্গে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সমালোচনা করে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নই আমি। আমি বিদ্যমান আইন-কানুনের মধ্যে থেকেই কাজ করি। তাই আমি নতুন আইন তৈরি করব না; বরং যেসব আইনি সুযোগ আছে, সেগুলোই সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাব।’
সম্প্রতি নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন এরিক অ্যাডামস। ইসরায়েল হায়োমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাডামস বলেন, ‘আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীকে (নেতানিয়াহু) শহরটি সফর করা উচিত। তিনি মামদানির শপথ অনুষ্ঠানে সিটি কাউন্সিলের উপস্থিতিতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমেই (সফর) শুরু করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সবচেয়ে বড় ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি এটি হবে একটি শক্তিশালী বার্তা যে তিনি নিউইয়র্ক সফর অব্যাহত রাখবেন।’
এবিসি৭–এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে মামদানি নিউইয়র্কের ইহুদি সম্প্রদায়কে সুরক্ষা ও সহায়তার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন।
আগামী ১ জানুয়ারি অ্যাডামসের মেয়াদ শেষ হবে। তখন মামদানি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র।