আলজাজিরার এক্সপ্লেইনার
প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১৩:১৬
তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের ওপর অবস্থান নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসনের ওপর স্থায়ী স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছেন।
এর একদিন আগে বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউস থেকে একটু দূরে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এতে গুরুতর আহত হন তারা। পরে একজন মারা যান। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে এক আফগান নাগরিকের নাম আসে।
ওই ঘটনার পরই ট্রাম্প তৃতীয় বিশ্ব থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিতের প্রতিশ্রুতি দেন। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিস্টেমকে পুরোপুরিভাবে উদ্ধারের জন্য আমি তৃতীয় বিশ্ব থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করবো, বাইডেনের অবৈধ লাখ লাখ অভিবাসীর অনুমোদন বাতিল করবো।
যদিও ট্রাম্প তৃতীয় বিশ্ব বলতে ঠিক কোন কোন দেশকে বুঝিয়েছেন তা পরিষ্কার করেননি। তবে সাধারণত তৃতীয় বিশ্ব বলতে বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলোকে বোঝানো হয়। যেসব দেশ অর্থনৈতিকভাবে এখনো উন্নয়নশীল বা পিছিয়ে আছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যে ব্যক্তি প্রকৃতভাবে কোনো সম্পদ নয়, অথবা যে ব্যক্তিরা আমাদের দেশকে ভালোবাসতে অক্ষম তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের দেওয়া হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নয়’ এমন ব্যক্তিদের জন্য সব ধরনের ফেডারেল সুবিধা এবং ভতুর্কি বাতিল করা হবে। আর অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা নষ্টকারী অভিবাসীকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সুবিধার ওপর নির্ভরশীল, নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি অথবা পশ্চিমা সভ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নন এমন অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।
চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরে আরও সাতটি দেশের নাগরিকের ওপর একই নিষেধাজ্ঞা দেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণসহ একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেন।
ট্রাম্প প্রশাসন আসলে কী বলছে?
ন্যাশনাল গার্ডকে গুলির ঘটনার পর সন্দেহভাজন হিসেবে ২৯ বছর বয়সী আফগান নাগরিক রামানুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবারের গুলিবর্ষণের ঘটনায় তাকে সন্দেহভাজন মনে করা হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই গুলির ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে আখ্যায়িত করেন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বাইডেনের আমলে আফগানিস্তান থেকে আসা প্রতিটা ব্যক্তির ব্যাপারে আমরা এখন অবশ্যই যাছাই-বাছাই করবো।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস) তাৎক্ষণিকভাবে আফগান নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিবাসনের জন্য সব আবেদন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। পরবর্তী সময়ে ইউএসসিআইএস পরিচালক জোসেফ এডলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের নির্দেশ’ অনুযায়ী, তিনি সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আসা প্রতিটি ব্যক্তির প্রতিটি গ্রিন কার্ডের পূর্ণাঙ্গ ও কঠোর যাছাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এই দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সুরক্ষাই সবার আগে। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ আগের প্রশাসনের বেপরোয়া ও দায়সারা পুনর্বাসন নীতির দায় বহন করবে না।
এডলো’র দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, যেসব দেশের নাগরিক গ্রিন কার্ডধারী কিন্তু অতিরিক্ত যাচাই–বাছাইয়ে পড়বেন, মূলত সেসব দেশই ট্রাম্প প্রশাসনের জুন মাসে ঘোষিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে।
চলতি বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী ও অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা–সম্পর্কিত হুমকি থেকে সুরক্ষা দিতে’ ট্রাম্প প্রশাসন ১৯টি দেশের নাগরিকের ওপর পূর্ণাঙ্গ বা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।
পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলো হলো—আফগানিস্তান, চাদ, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো (ডিআরসি), ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
আর আংশিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলোগলো (সীমিত পরিসরের নিষেধাজ্ঞা, এসব দেশের নাগরিকরা এখনো কিছু অস্থায়ী ভিসা পান) হলো—বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।
বৃহস্পতিবার রাতে ট্রুথ সোশালে ট্রাম্প বলেন, তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসনের ওপর ‘স্থায়ী স্থগিতাদেশ’ বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন।
অভিবাসনে স্থায়ী স্থগিতাদেশের অর্থ কী?
এটা অবশ্য পরিষ্কার না।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া নয়াদিল্লিভিত্তিক আইনজীবী অভিষেক সাক্সেনা আল জাজিরাকে বলেন, সাধারণ ইংরেজিতে ‘পারমানেন্ট পজ’ বা ‘স্থায়ী স্থগিত’ শব্দটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মতো শোনালেও অভিবাসন আইনে এর নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই।”
তিনি বলেন, “বাস্তবে ‘স্থায়ী স্থগিত’ বলতে সাধারণত এমন নিষেধাজ্ঞাকে বোঝায় যার শেষ সময় নির্ধারিত নয় বা অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এটিকে আইনগতভাবে অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত বলা যায় না।
মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট (আইএনএ) অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রয়োজনবোধে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য, অথবা নিজে পরিবর্তন বা প্রত্যাহার করার আগ পর্যন্ত অভিবাসীদের প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে পারেন। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জহীন নয়।
সাক্সেনার ভাষায়, যদি কোনো অনির্দিষ্টকালীন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের পাস করা আইনের পরিপন্থী হয়, তবে সেটির বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব।
জেনেভাভিত্তিক মিক্সড মাইগ্রেশন সেন্টারের (এমএমসি) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রবার্তো ফোরিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন কার ওপর এসব নীতি প্রযোজ্য হবে এবং ‘স্থায়ী স্থগিত’ বা ‘তৃতীয় বিশ্ব’ বলতে তিনি ঠিক কী বোঝাচ্ছেন ইচ্ছাকৃতভাবেই এই বিষয়ে অস্পষ্টতা রেখেছেন।
ফোরিন বলেন, নির্দিষ্ট সংজ্ঞা না থাকায় প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে এবং বিশ্বজুড়ে অভিবাসী সম্প্রদায়কে নির্বিচারে ভয় ও অনিশ্চয়তা ফেলতে পারে। একই সঙ্গে বিদেশনীতি পরিচালনায় লেনদেনভিত্তিক পদ্ধতির অংশ হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞাক আরেকটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এই নিষেধাজ্ঞা তুলনামূলকভাবে দরিদ্র দেশগুলোকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আর যেসব দেশ বিনিময়ে প্রাকৃতিক সম্পদ বা কৌশলগত কোনো সুবিধা দিতে পারে, তারা হয়তো রেহাই পাবে।
তার ভাষায়, এ ধরনের ঘোষণার মূল লক্ষ্য হলো কঠোর অবস্থান নেওয়া, রাজনৈতিক বিতর্কের দিক ঘুরিয়ে দেওয়া, ভয় তৈরি করা এবং অভিবাসীদের মানবিক মর্যাদা খর্ব করা। এবার ব্যবহারিক প্রয়োগ বা আইনি ফলাফল যাই হোক না কেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এসব দেশের নাগরিকদের ওপর কী প্রভাব পড়বে?
কোন কোন দেশকে তালিকাভুক্ত করা হবে এবং ঠিক কী ধরনের অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে—এর বিস্তারিত প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এসব দেশের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত নাগরিকরা কীভাবে প্রভাবিত হবেন, তা স্পষ্ট নয়।
ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের আগস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের জুন ২০২৫–এর পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ১২টি দেশের নাগরিকরা ‘বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের আর দেখতে যেতে পারবেন না।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলছে, জুনের আদেশ অনুযায়ী, বিদ্যমান ভিসা বাতিল করা যাবে না; তবে যাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের হয়ে ভিসা নবায়ন করতে হবে, তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশে ফিরে আসার অনুমতি না দিয়ে নিষেধাজ্ঞার আওতায় ফেলা হতে পারে।
সাক্সেনা বলেন, সীমিত বা কঠোর অভিবাসন নীতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মানুষের ওপর পরোক্ষভাবেও নানা ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
তার ভাষায়, প্রথমত, পেন্ডিং থাকা আবেদনগুলোতে বাড়তি নজরদারি আরোপ করা হবে। ইউএসসিআইএস সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকদের আবেদন অতিরিক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড চেক, দীর্ঘ নিরাপত্তা যাচাই বা সাময়িক স্থগিতাদেশের মুখে ফেলতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ইতিহাসে দেখা গেছে কোনো দেশকে যখন বাড়তি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হয়, তখন ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় সাধারণত বৃদ্ধি পায়।
সর্বশেষ, সরকার ইচ্ছামতো কারও বিদ্যমান রেসিডেন্সি স্ট্যাটাস বাতিল করতে না পারলেও, পূর্ববর্তী অভিবাসন নথিতে জালিয়াতি, ভুল তথ্য, নিরাপত্তা ঝুঁকি বা আইনি অযোগ্যতা খুঁজে দেখতে অডিট চালাতে পারে।
সাক্সেনা বলেন, ট্রাম্পের ‘তৃতীয় বিশ্বের দেশ’ থেকে অভিবাসন বন্ধ রাখার ঘোষণার ফলে বিদেশে থাকা স্বামী–স্ত্রী, সন্তান ও বাবা–মায়েদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঘোষণা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আটকে যেতে পারে।
তার ভাষায়, এর ফলে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা দীর্ঘ হতে পারে, পরিবারভিত্তিক অভিবাসন আবেদনের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে এবং পরিবার পুনর্মিলন কর্মসূচিগুলো ব্যাহত হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন শুধু কোনো দেশের নাম ঘোষিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকার কারণে তাদেরকে পরিবার থেকে আলাদা করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও আইএনএ–এর পারিবারিক ঐক্যের নীতিমালা দেশের ভেতরে অবস্থানকারী সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
গ্রিন কার্ডধারীদের কী হবে?
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসন সাংবাদিকদের জানায়, তারা জুন ২০২৫–এর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলোর নাগরিকদের হাতে থাকা সব গ্রিন কার্ড পুনরায় যাচাই করার পরিকল্পনা করছে। তবে এই প্রক্রিয়া কীভাবে চলবে, কিংবা গ্রিন কার্ড বাতিল বা রহিত করা হবে কিনা—তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মার্কিন অভিবাসন বিচারকদের গ্রিন কার্ড বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। গুরুতর অপরাধ— যেমন কেউ খুন বা ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পারেন বিচারকরা। আবার সরকারও জননিরাপত্তা ঝুঁকি মনে করলে বা ভিসা লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে।
সাক্সেনার মতে, সরকার আইনসম্মত প্রক্রিয়া ছাড়া গ্রিন কার্ড বাতিল করার কোনো বৈধ ক্ষমতা রাখে না। যেকোনো বাতিল প্রক্রিয়া অবশ্যই নির্দিষ্ট আইনি বিধান অনুযায়ী হতে হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়াগত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
গত বছর মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) সংস্থা ফিলিস্তিনপন্থি অ্যাকটিভিস্ট মাহমুদ খালিলকে ‘তার বক্তৃতার কারণে’ গ্রেপ্তার করে। খালিল তখন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন, কিন্তু আইস অভিযোগ তোলে যে তিনি গ্রিন কার্ডের আবেদনে তথ্য গোপন করেছিলেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এক মার্কিন অভিবাসন বিচারক নির্দেশ দেন, খালিলকে আলজেরিয়া বা সিরিয়ায় নির্বাসিত করা হবে। যদিও এখনো তা কার্যকর হয়নি।
চলতি বছর অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্প আর কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?
নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা এবং গ্রিন কার্ড পুনরায় যাচাইয়ের উদ্যোগ ছাড়াও, জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প শরণার্থী নেওয়া স্থগিত করেন।
জানুয়ারিতে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিপুল সংখ্যক অভিবাসী—বিশেষত শরণার্থীকে আমেরিকানদের প্রয়োজনীয় সম্পদের প্রাপ্যতা ব্যাহত করে গ্রহণের সক্ষমতা রাখে না।
এরপর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বনিম্ন শরণার্থী সীমা ঘোষণা করে। বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জন শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন।
চলতি নভেম্বরের ২৫ তারিখে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দেখা এক মেমো অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন জো বাইডেন প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব শরণার্থীর স্ট্যাটাস পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি তাদের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার আবেদন স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছে।
মেমোতে বলা হয়েছে, ইউএসসিআইএস প্রধান এলডো স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা প্রায় দুই লাখ ৩৩ হাজার শরণার্থীর অবস্থা ও আবেদনপত্র পর্যালোচনা করা হবে। জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে শরণার্থী গ্রহণ স্থগিতের বিষয়ে ট্রাম্পের জানুয়ারির নির্বাহী আদেশকেই এ পদক্ষেপের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।