ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দের পর দেশটির তেল পরিবহনকারী আরও ৬টি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, কেবল জাহাজ নয়, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বেশ কয়েকজন আত্মীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যবসার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, জব্দ করা জাহাজটি স্কিপার অবৈধভাবে তেল পরিবহনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে। অন্যদিকে কারাকাস এই পদক্ষেপকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
এ ঘটনাকে মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন চাপ বাড়ানোর একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পরিবহনের অভিযোগে একাধিক নৌকা ও নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে।
ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করে আসছে যে, ওয়াশিংটন তাদের তেলসম্পদ কবজা করতে চাইছে। মাদুরো বুধবার বলেন, তার দেশ কখনো তেলের উপনিবেশ হতে দেবে না।
লেভিট জানান, যুক্তরাষ্ট্র মাদক চোরাচালান রোধ এবং নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, স্কিপারে থাকা তেলও আইনি প্রক্রিয়া শেষে জব্দ করা হবে। তবে আরও জাহাজ আটকানোর পরিকল্পনা আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে, মাদুরোর স্ত্রীর তিন ভাগ্নে ও বেশ কয়েকটি ব্যবসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, এসব পদক্ষেপ মাদুরোর স্বৈরাচারী ও বর্বর নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করতে সহায়তা করবে।
হোয়াইট হাউস বুধবার স্কিপারে অভিযান চালানোর নাটকীয় ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে হেলিকপ্টার থেকে কমান্ডোদের দড়ি বেয়ে নেমে জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।
ভেনেজুয়েলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেলো জাহাজ জব্দের তীব্র নিন্দা জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘খুনি, চোর, জলদস্যু বলে অভিহিত করেছেন এবং আরও বলেছেন যে এভাবেই দেশটি ‘সারা বিশ্বে যুদ্ধ শুরু করেছে’।
সিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ এবং ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস-কুদস ফোর্সের জন্য রাজস্ব আয়কারী তেল চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ২০২২ সালে স্কিপার জাহাজটিকে অনুমোদন দেয়।
অভিযানের আগের দিনগুলিতে আমেরিকা উত্তরে ভেনেজুয়েলার সীমান্তবর্তী ক্যারিবিয়ান সাগরে তার সামরিক উপস্থিতি জোরদার করে। এতে হাজার হাজার সৈন্য এবং বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ডকে ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি অবস্থানে রাখা হয়েছিল।