শত্রুকে ধ্বংস করতে গিয়ে নিজের অতি গোপনীয় এক অস্ত্রই যেন শত্রুর হাতে তুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র। রীতিমতো নাটকীয়ভাবে মার্কিন বোমার প্রযুক্তিগত নকশা পেয়ে যায় ইরান। এর ফলে আগামী দিনের মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘাত আরও উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
বলা হয়ে থাকে যে, কোনো প্রযুক্তি চুরি করার ক্ষেত্রে বেশ দক্ষ ইরানের প্রকৌশলীরা। ফলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় মার্কিন এই বোমার ইরানি সংস্করণ খুব দ্রুতই দেখা যাবে মধ্যপ্রাচ্যের রণাঙ্গনে।
তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর হিজবুল্লাহর শীর্ষস্থানীয় সামরিক কমান্ডার হাইসাম আলী তাবতাবায়ি হত্যা করতে হামলা চালায় ইসরাইলের বিমানবাহিনী। সে সময় ইসরায়েলের ছোড়া একটি জিবিইউ-৩৯বি বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় থেকে যায়। ঘটনার পরপরই হিজবুল্লাহর নিরাপত্তা ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে তার ছবি তোলে। পরে এর থেকে ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বিচ্ছিন্ন করে কিছু অংশ ইরানে পাঠায় হিজবুল্লাহ।
অন্যদিকে, চলতি বছরের জুনে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলায় বাংকার ধ্বংসকারী ১৩ টনের জিবিইউ-৫৭ বোমা ব্যবহার করেছিল আমেরিকা। সে সময়ও একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটেনি। ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ওই বোমাটির প্রযুক্তি উদঘাটন করেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে তারা এর সফল রেপ্লিকা বোমাও তৈরি করেছে। এ ঘটনার পর ওয়াশিংটনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও ইরান জিবিইউ-৫৭ বোমার সফল রেপ্লিকা তৈরি করেছে; কিন্তু এর ওজনের কারণে সব জায়গায় মোতায়েন করা সম্ভব হবে না। অপরদিকে জিবিইউ-৩৯-এর প্রতিটি বোমা এক টনেরও কম ওজনের। ফলে ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পে বিশেষ করে মিসাইল তৈরির জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরানের সামরিক প্রকৌশলীরা ইতোমধ্যেই জিবিইউ-৫৭-এর প্রযুক্তি ‘ফাতাহ’ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইলে সংযুক্ত করেছে, যা এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। একইসঙ্গে এরচেয়ে আরও উন্নত প্রযুক্তি দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লার খুররম শহর-৪ মিসাইলের জন্য গবেষণা চলছে।