প্রকাশিত :
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২১:১৭
সৌদি আরবের শিল্প খাতে গতি আনতে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ জোরদার করতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর আরোপিত ইকামা বা ওয়ার্ক পারমিট ফি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা।
সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অর্থনৈতিক ও উন্নয়নবিষয়ক পরিষদ (সিইডিএ)-এর সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয় বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সৌদি গেজেট। আনুমানিক ৭–৮ বছর পর সৌদি আরবে এই ইকামা (প্রবাসী কর্মী লেভি) ফি মওকুফ করা হয়। খবর জিও নিউজের।
শিল্প ও খনিজসম্পদমন্ত্রী বান্দার আলখোরায়েফ বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর আরোপিত আর্থিক ফি বা চার্জ মওকুফের ফলে সৌদি আরবে টেকসই শিল্প উন্নয়ন আরও জোরদার হবে। তিনি এটিকে ভিশন ২০৩০-এর আওতায় শিল্প খাতকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা দেয়ার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী আরও বলেন, এই পদক্ষেপ সৌদি শিল্পের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াবে এবং তেলনির্ভরতা কমিয়ে অন্য জিনিসের রপ্তানির বিস্তার ঘটাতে সহায়ক হবে।
ভিশন ২০৩০-এর আওতায় সৌদি আরব তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে বহুমুখী অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে নতুন এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আলখোরায়েফ জানান, ইকামা ফি বাতিলের ফলে কারখানাগুলোর পরিচালন ব্যয় কমবে, মানসম্মত বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে উৎসাহিত হবে। পাশাপাশি অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তির মতো আধুনিক ব্যবসায়িক মডেল দ্রুত গ্রহণে সহায়ক হবে এই সিদ্ধান্ত।
এদিকে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে সৌদি আরব এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় উৎস। গত নভেম্বরে দেশটিতে কর্মরত পাকিস্তানিরা ৭৫৩ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যেখানে থেকে এসেছে ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার।
সৌদি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পাকিস্তান থেকে ১৮ লাখ ৮৮ হাজার কর্মী সৌদি আরবে গেছেন, যা ২০১৫–১৯ সময়কালের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি সেপ্টেম্বর মাসে দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের পর ইসলামাবাদ সৌদি আরবে বার্ষিক জনশক্তি রপ্তানি ১০ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে বলেও জানা গেছে।
এ পর্যন্ত পাকিস্তানের শ্রমিক রপ্তানি মূলত নির্মাণ, সংশ্লিষ্ট কারিগরি পেশা, স্বাস্থ্যসেবা ও আতিথেয়তা খাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এখন সরকার নতুন খাতেও কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।