প্রকাশিত :
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১০:০৯
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলা যুদ্ধ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হলেও কেবল চলতি বছরেই ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী প্রায় পাঁচ লাখ সেনা হারিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসভের দাবি, বিপুল পরিমাণ সেনা হারানোর কারণে ইউক্রেনের যুদ্ধ করার সক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে গেছে এবং জোরপূর্বক সেনা সমাবেশের মাধ্যমেও বাহিনীর সদস্য সংখ্যা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম আরটি এক প্রতিবেদনে জানায়, বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বোর্ড সভায় দেওয়া বক্তব্যে ২০২৫ সালে ইউক্রেনের প্রায় পাঁচ লাখ সেনা হারানোর এ তথ্য জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসভ। সভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত ছিলেন।
আন্দ্রেই বেলৌসভ বলেন, গত এক বছরে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে, যার ফলে বেসামরিক নাগরিকদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে বাহিনী পূরণ করার ক্ষমতাও কিয়েভের হারিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের বাহিনী প্রায় পাঁচ লাখ সেনা হারিয়েছে। এর ফলে বাধ্যতামূলক বেসামরিক নিয়োগের মাধ্যমে সেনাদল পূরণ করার সক্ষমতা কিয়েভের আর নেই’। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী, চলতি বছরে ইউক্রেন ১ লাখ ৩ হাজারের বেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ৫০০টি ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর তৈরি, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত তীব্র হওয়ার পর ২০২২ সালেই ইউক্রেন সাধারণ সেনা সমাবেশ ঘোষণা করে। সে সময় ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গত বছর দেশটি সেনা ভর্তির বয়সসীমা ২৭ থেকে কমিয়ে ২৫ বছরে নামিয়ে আনে এবং নিয়োগের নিয়ম আরও কঠোর করে। এই জোরপূর্বক সেনাভুক্তি অভিযানকে কেন্দ্র করে অনিচ্ছুক নাগরিকদের সঙ্গে নিয়োগ কর্মকর্তাদের একাধিকবার সহিংস সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থতা ও জনবল সংকটের মুখে ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়োগ অভিযান দিন দিন আরও কঠোর হয়ে উঠেছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া শত শত ঘটনায় দেখা গেছে, সেনা নিয়োগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সম্ভাব্য সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন, রাস্তায় ধাওয়া করেছেন এবং বাধা দিতে আসা পথচারীদের হুমকি দিয়েছেন।
তবে এত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তা ও ফ্রন্টলাইনের কমান্ডাররা অভিযোগ করছেন, সেনা সমাবেশ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না। এর ফলে রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে।