আলু-পেঁয়াজ থেকে বেগুন-শসা, সবজির ঝুড়ি এখন যেন মধ্যবিত্তের আতঙ্কের নাম।
প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০২৫, ২:৪২:৪৬
ঢাকার কারওয়ান বাজারে আজ সকালে এক কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, শসা ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৭৫ টাকা, আর কাঁচামরিচ? সে তো প্রায় রেকর্ড গড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা কেজি! টানা কয়েক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতে চাষাবাদে নেমে এসেছে বিপর্যয়। জমিতে পানি, খেতে পচন, আর সরবরাহে ঘাটতি ফলে চড়া বাজারে নাকাল সাধারণ মানুষ।
"সবজি তো খাওয়াই ছাড়ছি, এখন তো ধনেপাতার গন্ধটাই শুধু নেয়ার সময়!" —নাজমা খাতুন, গৃহিণী, মিরপুর
বিশেষজ্ঞ মত:
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রবিউল হক বলেন, “টানা বৃষ্টিতে মূলত নিুাঞ্চল এবং নদী–উপকূলীয় এলাকার সবজিখেতে পানি জমে যায়। এতে গাছ পচে যায়, ফলন নষ্ট হয়। এর ফলেই বাজারে সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়ে যায়।” বেশিরভাগ সবজি আসে ঢাকার আশপাশের সাভার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং টাঙ্গাইল অঞ্চল থেকে। এসব অঞ্চলের চাষিরা বলছেন, সবজি তোলে বাজারে পৌঁছাতে পারলেও পথঘাটে কাদায় ভরা দুর্ভোগ, পরিবহন খরচও বেড়েছে দ্বিগুণ।
বিশ্বপ্রেক্ষাপটে নজর:
ভারত, নেপাল বা ফিলিপাইনের মতো বর্ষাভিত্তিক কৃষিনির্ভর দেশগুলোতেও বর্ষাকালে এই সমস্যাটি সাধারণ। তবে তাদের অনেক অঞ্চলে ‘গ্রীনহাউস ফার্মিং’ বা ‘ভার্টিকাল ফার্ম’-এর মাধ্যমে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় বাজার।
আশার আলো কোথায়?
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য জরুরি বীজ ও সার বিতরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শহরের বড় বড় সুপারশপ ও কাঁচাবাজারে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে যাতে অতি মুনাফা লুটতে না পারে কেউ।
শেষ কথা:
বর্ষা প্রকৃতির সুরে সুর মিলিয়ে আসে, কিন্তু সেই সুর যদি হয়ে ওঠে দুর্ভোগের সংগীত, তবে সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে ওঠে করুণ। সবজির হাহাকার যেন শুধু পেট নয়, প্রশ্ন তোলে এত বছরেও আমরা কবে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার দিকে তাকাবো? জল জমে আছে জমিতে, কিন্তু সেই জলে যেন ডুবে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের সংসার!