উৎপাদন বেশি, খরচ কম চাষিদের মুখে ফিরছে হাসি-
প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২৫, ৪:২৯:৩৯
বাংলাদেশের কৃষিতে আবারও জ্বলে উঠল আশার আলো। সম্প্রতি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) উদ্ভাবন করেছে তিনটি নতুন ধান জাত BRRI dhan108, 109 ও 110। এই জাতগুলো শুধু বেশি ফলনশীলই নয়, বরং খরা, লবণাক্ততা ও নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। জলবায়ু পরিবর্তনের এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে এই উদ্ভাবনকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন “কৃষি নিরাপত্তার নতুন হাতিয়ার”। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে খরা বা লবণাক্ততা একটি বড় সমস্যা সেখানেও এই ধানের ফলন ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে গবেষকরা আশা করছেন। "একটি ভালো জাত মানে শুধু ফসল নয়, এটি কৃষকের ভবিষ্যৎ নির্ভরতার জায়গা।"— ড. মো. হুমায়ুন কবীর, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ব্রি
জাতগুলোর বিশেষত্ব কী?
BRRI dhan108: রোগ প্রতিরোধী, স্বল্প সময়ে পরিপক্ব, উচ্চ ফলনশীল।
BRRI dhan109: খরা সহনশীল, দানাগুলো সুগন্ধি ও উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন।
BRRI dhan110: উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় চাষযোগ্য, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল।
গবেষণায় দেখা গেছে, এগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে ৮ টন পর্যন্ত যেতে পারে যা পুরনো জাতের তুলনায় ২০-২৫% বেশি।
কৃষকের চোখে স্বপ্নের ধান-
ময়মনসিংহের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, “বছরে একাধিকবার ফলন সম্ভব হওয়ায় এবার আমি BRRI dhan109 বেছে নিয়েছি। ফলন দেখে অভিভূত।” এই জাতগুলোতে রাসায়নিক ব্যবহারও কম। ফলে উৎপাদন খরচও অনেক কমে আসে, যা কৃষকের আয় বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শুধু ব্যক্তি কৃষকের জন্য নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।
আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ ও ভবিষ্যৎ
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা FAO জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্যের চাহিদা ৫০% বেড়ে যাবে। তাই কৃষিতে এমন উদ্ভাবন সময়োপযোগী। ভারতের IARI, ফিলিপাইনের IRRI বা চীনের হাইব্রিড ধান গবেষণার সাফল্যের পর এবার বাংলাদেশের নতুন ধান জাত এই প্রতিযোগিতায় দেশকে এগিয়ে রাখছে।
শেষ কথা
এই তিনটি ধান জাত শুধু উৎপাদন বাড়াবে না, বরং কৃষকদের মধ্যে ফের আশার সঞ্চার করবে। যখন জলবায়ুর হুমকিতে খাদ্যনিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে, তখন এই উদ্ভাবন হতে পারে বাংলাদেশের কৃষির নতুন বাঁচার গল্প।
“ধানের শিষে এবার শুধু সোনা নয়, জ্বলছে ভবিষ্যতের আলো।” — রিজওয়ান আহমেদ, কৃষি বিশ্লেষক