স্মার্ট খামার ব্যবস্থাপনা থেকে রফতানিমুখী প্রস্তুতি সব কিছু শেখানো হচ্ছে হাতে-কলমে
প্রকাশিত : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১১:০৪:৩৮
দেশের পোল্ট্রি খাত শুধু খাদ্যনিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ নয়, এটি কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির একটি বড় চালিকাশক্তিও। তবে খরচ বৃদ্ধি, রোগের ঝুঁকি, বাজার অনিশ্চয়তা ও প্রযুক্তির ঘাটতি এ খাতের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বাস্তবতায় পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (PISDI)-এর অধীনে শুরু হয়েছে জাতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কর্মশালা, যার মূল লক্ষ্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা।
"সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে একেকজন খামারি হয়ে উঠতে পারেন উদ্যোক্তা।"— ড. শামীম আহমেদ, প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ
কী থাকছে প্রশিক্ষণে?
প্রশিক্ষণে তুলে ধরা হচ্ছে—বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা ,ফিড ফর্মুলেশন ও অ্যান্টিবায়োটিক বিকল্প ,স্মার্ট খামার ডিজিটালাইজেশন ,রফতানিযোগ্য মান নিশ্চিতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কৌশল , নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ মডিউল । এ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, যশোর, কুমিল্লা সহ দেশের ১৫টি জেলার প্রায় ৫০০ খামারি ও নতুন উদ্যোক্তা।
বদলে যাচ্ছে পোল্ট্রি ব্যবস্থাপনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন সময় হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান FAO বলছে, দক্ষতা বাড়াতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ পোল্ট্রি রপ্তানিতে নেতৃত্ব দিতে পারে। রাজশাহীর খামারি আবুল কাসেম বলেন, “আগে শুধু খামার করতাম, এখন বুঝতে পারছি বাজার, মান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব কতটা।”
পোল্ট্রি, প্রযুক্তি ও প্রবৃদ্ধির যুগলবন্দী
পোল্ট্রি খাতকে এগিয়ে নিতে এখন প্রয়োজন টেকনোলজি-ড্রিভেন অ্যাপ্রোচ। প্রশিক্ষণে IoT প্রযুক্তি, অটোমেটেড ফিডার, রিমোট টেম্পারেচার কন্ট্রোলের মতো বিষয় নিয়েও হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে। এই উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন “নীরব বিপ্লব”।
শেষ কথা
বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে হলে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও পরিকল্পনার সমন্বয় দরকার। এই কর্মশালা সে পথেই এক সাহসী পদক্ষেপ। খামারিরা যেন শুধু ডিম ও মুরগি উৎপাদক না থাকেন তারা হোক দক্ষ উদ্যোক্তা, বাজারচিন্তক, প্রযুক্তিবান। “এই প্রশিক্ষণ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে খামার এখন শুধু কাজ নয়, একধরনের বিজ্ঞান।” — আফরোজা সুলতানা, নারী খামারি, কুমিল্লা